সংস্কৃতি, প্রাচীন সভ্যতা, স্মারকস্তম্ভ, ঐতিহাসিক নির্মাণ রক্ষার সচেতনতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে আজ (১৮ এপ্রিল) বিশ্বব্যাপী পালিত হচ্ছে বিশ্ব ঐতিহ্য দিবস।
১৯৮২ সালে ‘ইন্টারন্যাশনাল কাউন্সিল ফর মনুমেন্টস অ্যান্ড সাইটস (ICOMOS)’ তিউনিশিয়ায় ১৮ এপ্রিলকে ‘ইন্টারন্যাশনাল ডে ফর মনুমেন্টস অ্যান্ড সাইটস’ হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নেয়।
পরের বছর ১৯৮৩ সালে দিনটি ‘বিশ্ব ঐতিহ্য দিবস’ হিসেবে ইউনেস্কোর স্বীকৃতি পায় এবং বিশ্বব্যাপী দিবসটি নানা আয়োজনে পালিত হয়।
২০২৪ থেকে ২০২৭ সাল পর্যন্ত দিবসটি প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘দুর্যোগ এবং সংঘর্ষে স্থিতিস্থাপক ঐতিহ্য: প্রস্তুতি, প্রতিক্রিয়া এবং পুনরুদ্ধার’।
সাম্প্রতিক সংঘাত ও দুর্যোগে বিশ্বব্যাপী ঐতিহ্যের যে ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে, তার বিপরীত ঐতিহ্য রক্ষায় করণীয় পদক্ষেপকে উদ্বুদ্ধ করতে এই ২০২৩ সালে এই প্রতিপাদ্য ঘোষণা করে কাউন্সিল।
সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ঐতিহ্য সমৃদ্ধ একটি দেশ। দেশের আনাচে কানাচে অজস্র ঐতিহ্য ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকলেও বিশ্ব ঐতিহ্যের স্বীকৃতি পেয়েছে মাত্র দুটি প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা- সোমপুর মহাবিহার ও বাগেরহাট ষাট গম্বুজ মসজিদ।
অথচ আমাদের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ এখন পর্যন্ত ৫২৪টি প্রত্নস্থল সংরক্ষণ করেছে আর এর বাইরেও রয়ে গেছে অগণিত ঐতিহাসিক স্থাপনা। আর ঐতিহাসিক স্থাপনার বাইরে আমাদের সামাজিক, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের কথা বিবেচনা করলে বাংলাদেশ অনন্য এক অবস্থানে আছে বিশ্বের দরবারে।
সিলেটের ঐতিহ্য বিবেচনায় অজস্র স্থাপনা থাকলেও প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর তার খুব সামান্য একটি অংশ সংরক্ষণের আওতায় এনেছে আর অবহেলায় রয়ে গেছে এই অঞ্চলের অগণিত ঐতিহ্য। আর এই অবহেলার মধ্যেই ধীরে ধীরে ধ্বংস হচ্ছে ঐতিহাসিক নিদর্শন।
ইতিমধ্যে সিলেট নগরীতে ভেঙে ফেলা হয়েছে আবু সিনা ছাত্রাবাসের প্রাচীন ভবন, ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী আসাম প্যাটার্নের বাড়িঘর আর এই তালিকায় সর্বশেষ হুমকির সম্মুখীন মুরারিচাঁদ কলেজের ঐতিহাসিক শিক্ষাভবন।
বিশ্ব ঐতিহ্য দিবসকে সামনে রেখে বিশ্বব্যাপী যেমন বিভিন্ন আয়োজন রয়েছে, তেমনি দেশেও নানা আয়োজনে পালন করা হবে দিবসটি।
আজ বিশ্ব ঐতিহ্য দিবস উপলক্ষে বিকেল ৩টায় সিলেট কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের সাহিত্য আসর কক্ষে পরিবেশ ও ঐতিহ্য সংরক্ষণ ট্রাস্ট, সিলেট আয়োজন করেছে ‘ইতিহাস ও ঐতিহ্য সংরক্ষণে আমাদের করণীয়’ শীর্ষক একটি মুক্ত আলোচনা সভা।