বিশ্বনাথ শহর পরিস্কার করলেন শতাধিক শিক্ষার্থী

বিভিন্ন স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসার কয়েক শতাধিক শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দের অংশগ্রহণে সিলেটের বিশ্বনাথ পৌরশহরে ‘ক্লিন বিশ্বনাথ, সেইভ বিশ্বনাথ’ কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।

কর্মসূচি চলাকালে অবিলম্বে বাসিয়া নদীর উৎস্যমুখ খনন ও নগীর দুই তীরের সকল অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে আনার জোর দাবি জানিয়ে বক্তারা বলেন, মানুষের লোভের কারণে বিশ্বনাথ বাজার এলাকায় বাসিয়া নদী দখল হয়ে যাচ্ছে। নদীর উপর তৈরি হয়েছে দোকানপাট। আর শতাধিক এই দোকানের ময়লা আর্বজনা ফেলে বাসিয়ার স্থলদেশ ভরাট করা হচ্ছে। এমন অপকর্মের বিরুদ্ধে প্রশাসনকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।

বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) বাঁচাও বাসিয়া নদী ঐক্য পরিষদ ও সচেতন বিশ্বনাথ সমাজ কল্যাণ সংস্থার যৌথ উদ্যোগে ও শাহ্ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আবুল কালাম শাহ্ এর অর্থায়নে, বিশ্বনাথ পৌরসভার সহযোগীতায় এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।

কর্মসূচির উদ্বোধন করেন, বিশ্বনাথ পৌরসভার মেয়র মুহিবুর রহমান। বাঁচা বাসিয়া নদী ঐক্য পরিষদ ও সচেতন বিশ্বনাথ সমাজ কল্যাজ কল্যাণ সংস্থার আহবায়ক ফজল খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনাসভায় প্রধান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নুসরাত জাহান।

বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) আসমা জাহান সরকার, সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সিলেট আঞ্চলিক কমিটির কোষাধ্যক্ষ ছামির মাহমুদ, শাহ্ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান যুক্তরাজ্য প্রবাসী আবুল কালাম শাহ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নুসরাত জাহান বলেন, বিশ্বনাথকে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা রাখা আমাদের সকলের নাগরিক দায়িত্ব ও কর্তব্য। এতে জনপ্রতিনিধি, রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ীসহ সকলকে আন্তরিক হতে হবে। নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে নদীর তীরের সকল অবৈধ দখল উচ্ছেদসহ বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে জেলা প্রশাসক স্যারসহ উচ্চ পর্যায়ে আলোচনা চলছে। অচিরেই উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে।

উদ্বোধকের বক্তব্যে পৌর মেয়র মুহিবুর রহমান বলেন, অবৈধ দখলদাররা যতই শক্তিশালী হোক, পর্যায়ক্রমে মাসুকগঞ্জ বাজারে বাসিয়ার উৎসমুখসহ নদীর দুই তীরের সকল অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে বাসিয়ার নাব্যতা ফিরিয়ে আনা হবে। তিনি বলেন, যারা নদী দখল করেছেন কতারা স্বেচ্ছায় দখল ছেড়ে দেন। তাহলে আমরা পৌরসভার মাধ্যমে তাদের সংবর্ধনা দিয়ে দখলদারের তালিকা থেকে তাদের নাম বাদ দিয়ে দিবে। নদী উদ্ধারে পরিকল্পনামন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্থানীয় সংসদ সদস্যের সাথে যোগাযোগ হচ্ছে বলেও জানান মেয়র।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সিলেট আঞ্চলিক কমিটির কোষাধ্যক্ষ ছামির মাহমুদ বলেন, আমাদের নিজেদের সুন্দর পরিবেশে বাঁচার তাগিদেই বাসিয়া নদীর সকল অবৈধ দখলদারদের বিতারিত করতে হবে। এ অঞ্চলের কৃষি ও মৎস্য সম্পদ রক্ষার জন্য বাসিয়া নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে আনার কোনোর বিকল্প নেই। প্রকৃতির সাথেম যদি আমরা এমন বিরুপ আচরণ করি পরিবেশ-প্রকৃতিও আমাদের সাথে বিরুপ আচরণ করবে। যা এবারের বন্যায় আমরা এর পরিনাম ভোগ করেছি।

সচেতন বিশ্বনাথ সমাজ কল্যাণ সংস্থার সদস্য সচিব আব্দুল বাতিন ও বাঁচাও বাসিয়া নদী ঐক্য পরিষদের সদস্য সচিব শামসুল ইসলাম মোমিনের যৌথ পরিচালনায় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিশ্বনাথ প্রেস ক্লাবের সভাপতি তজম্মুল আলী রাজু, বিশ্বনাথ সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আব্বাস হোসেন ইমরান, বিশ্বনাথ মাদানিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক হাসান বিন ফাহিম, আল- হেরা শপিং সিটি ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মনোহর হোসেন মুন্না, সংগঠক নাজমুল ইসলাম মকবুল, নিজাম উদ্দিন, ওয়াসিম উদ্দিন, বশির আহমদ।

সভার শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাঁচাও বাসিয়া ঐক্য পরিষদের যুগ্ম আহবায়ক রাজা মিয়া।

‘ক্লীন বিশ্বনাথ, সেইভ বিশ্বনাথ’ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন, বিশ্বনাথ সরকারি কলেজ, বিশ্বনাথ দারুল উলুম কামিল মাদ্রাসা, ধ্রæবতারা ইয়ুথ ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন বিশ্বনাথ, রামসুন্দর সরকারি অগ্রগামী মডেল উচ্চ বিদ্যালয়, হাজী মফিজ আলী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কলেজ, জনকল্যাণ উচ্চ বিদ্যালয়, জামেয়া ইসলামিয়া দারুল উলুম মাদানিয়া মাদ্রাসা, মেরিট কেয়ার স্কুল এন্ড কলেজ, বিয়াম ল্যাবরেটরী স্কুল, বিশ্বনাথ কলেজুয়েট স্কুল এন্ড কলেজ, বিশ্বনাথ বাউল আব্দুল করিম পরিষদ, শাহ আমিন উল্লাহ মাদ্রাসা ও এতিম খানা (ইলামেরগাঁও, ফকির বাড়ি), মাদ্রাসায়ে তাহফিজুল কোরআন, বাসিয়া নাট্য কল্যাণ সংস্থা, সিঙ্গেরকাছ মানবতার ঘর, বিশ্বনাথ নাটক ঘর, শেখ নেছার আহমেদ যুব ও ক্রীড়া সমাজ কল্যাণ সংস্থা, আলহাজ্ব লেচু মিয়া স্কুল এন্ড কলেজ, হুব্বে রাসুল (সা.) ইসলামী যুব সংঘ।