বিশ্বজুড়ে ফের চোখ রাঙাচ্ছে করোনাভাইরাস। হু হু করে বাড়ছে সংক্রমণ ও মৃত্যু। দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা আরও বেড়েছে। একই সঙ্গে আগের দিনের তুলনায় বেড়েছে নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যাও। গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন প্রায় দেড় হাজার মানুষ। একই সময়ে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা পৌঁছেছে প্রায় সোয়া ৮ লাখে।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে ফ্রান্সে। অন্যদিকে দৈনিক প্রাণহানির তালিকায় শীর্ষে উঠে এসেছে ব্রাজিল। প্রাণহানির তালিকায় এরপরই রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, ইতালি, ফ্রান্স, তাইওয়ান ও অস্ট্রেলিয়া। এতে বিশ্বব্যাপী করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৫৬ কোটি ২৬ লাখের ঘর। অন্যদিকে মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৬৩ লাখ ৭৬ হাজার।
বুধবার (১৩ জুলাই) সকালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত, মৃত্যু ও সুস্থতার হিসাব রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারস থেকে পাওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১ হাজার ৪২৭ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে প্রায় তিনশো। এতে বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৬৩ লাখ ৭৬ হাজার ৪৩৬ জনে।
একই সময়ের মধ্যে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৮ লাখ ২২ হাজার ৭৯৯ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে আড়াই লাখের বেশি। এতে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত ভাইরাসে আক্রান্ত মোট রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৬ কোটি ২৬ লাখ ৯৭ হাজার ৫৩ জনে।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বে করোনায় সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে ফ্রান্সে। গত ২৪ ঘণ্টায় এই দেশটিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ৮২ হাজার ৬ জন এবং মারা গেছেন ১২৬ জন। করোনা মহামারির শুরু থেকে এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৩ কোটি ২৫ লাখ ৪৮ হাজার ৯৪৭ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ৫০ হাজার ৩০৫ জন মারা গেছেন।
অন্যদিকে দৈনিক প্রাণহানির তালিকায় শীর্ষে উঠে এসেছে ব্রাজিল। লাতিন আমেরিকার এই দেশটি করোনায় আক্রান্তের দিক থেকে তৃতীয় ও মৃত্যুর সংখ্যায় তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৩৫২ জন এবং নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ৬৪ হাজার ৭৭১ জন। অপরদিকে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৩ কোটি ৩০ লাখ ৫ হাজার ২৭৮ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৬ লাখ ৭৪ হাজার ১৬৬ জনের।
যুক্তরাষ্ট্রে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৯৩ হাজার ১৫১ জন এবং মারা গেছেন ২৫১ জন। করোনাভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৯ কোটি ৬ লাখ ৮১ হাজার ৩২ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১০ লাখ ৪৬ হাজার ৬১০ জন মারা গেছেন।
ইতালিতে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ৪২ হাজার ৯৬৭ জন এবং মারা গেছেন ১৫৭ জন। করোনা মহামারির শুরু থেকে ইউরোপের এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ১ কোটি ৯৬ লাখ ৬৭ হাজার ৩২০ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ৬৯ হাজার ৩৯০ জন মারা গেছেন। একইসময়ে কানাডায় নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১২ হাজার ৮১ জন এবং মারা গেছেন ২৮ জন।
তাইওয়ানে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৬০ জন এবং নতুন করে ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন ৩১ হাজার ২৯৭ জন। এছাড়া মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৪১ লাখ ৩২ হাজার ৪২৯ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৭ হাজার ৭৮০ জনের। একইসময়ে জাপানে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৪৬ হাজার ৩৩ জন এবং মারা গেছেন ১৯ জন।
রাশিয়ায় গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৪৮ জন এবং নতুন করে ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন ৩ হাজার ২ জন। এছাড়া মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১ কোটি ৮৪ লাখ ৬৮ হাজার ৩১০ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৩ লাখ ৮১ হাজার ৬৬৯ জনের। একইসময়ে স্পেনে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১৪ হাজার ৮০৫ জন এবং মারা গেছেন ৫৩ জন।
এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় অস্ট্রেলিয়ায় নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৪১ হাজার ২৫৯ জন এবং মারা গেছেন ৫৮ জন। একইসময়ে থাইল্যান্ডে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ৬৭৯ জন এবং মারা গেছেন ২৩ জন। চিলিতে নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৪ হাজার ৫৭৩ জন এবং মারা গেছেন ১৮ জন।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর ২০২০ সালের ১১ মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) করোনাকে ‘বৈশ্বিক মহামারি’ হিসেবে ঘোষণা করে। এর আগে একই বছরের ২০ জানুয়ারি বিশ্বজুড়ে জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করে সংস্থাটি।