সিলেটের বিয়ানীবাজারে শেখ নাদিরা বেগম (৩৫) নামে এক গৃহবধূকে যৌতুকের টাকার জন্য অমানুষিক নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গত রবিবার (২৮ মে) বিকেলে উপজেলার চারখাই ইউনিয়নের খাপন (আদিনাবাদ) গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় বুধবার (৩১ মে) নির্যাতিতা গৃহবধু তার স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে সিলেট সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অভিযোগ দাখিল করেন। নির্যাতিতা শেখ নাদিরা বেগম খাপন (আদিনাবাদ) গ্রামের মো. জিবান এর স্ত্রী ও গোলাপগঞ্জ উপজেলার ঢাকা দক্ষিণ ইউনিয়নের পূর্ব খর্দ্দাপাড়া গ্রামের মৃত শেখ আব্দুল মুনিমের মেয়ে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২০২০ সালের ১ জুলাই খাপন (আদিনাবাদ) গ্রামের আব্দুর রহিমের ছেলে মো. জিবান (৪১) এর সাথে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। ২০২২ সালের ৫ জানুয়ারী তাদের এক কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। এরপর থেকেই মা ও বোনের প্ররোচনায় গৃহবধু শেখ নাদিরা বেগমকে তার পরিবারের কাছ থেকে নগদ দুই লাখ টাকা যৌতুকের জন্য চাপ দিতে থাকেন স্বামী মো. জিবান। তার পরিবারের লোকজন অস্বচ্ছল হওয়ায় তিনি টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে বিভিন্ন সময় শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করেন তারা।
সবশেষ গত রবিবার (২৮ মে) যৌতুকের জন্য চাপ দিলে তিনি টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে আবারও নির্যাতন করে তার মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়া হয়। পরে তিনি কৌশলে পরিবারের লোকজনকে বিষয়টি অবগত করলে তারা সেখানে উপস্থিত হন। এসময় পরিবারের লোকজন তাদের উপরও চড়াও হয়ে নির্যাতন শুরু করেন। পরে পুলিশ, স্থানীয় ইউপি সদস্য ও স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করেন।
ভোক্তভুগী নাদিরা বেগমের ভাই কামরুল ইসলাম জানান, বোনকে নির্যাতনের খবর পেয়ে সেখানে গেলে তারা আমাদেরকেও মারধর করে। পরে ৯৯৯ এ কল দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে, স্থানীয় ইউপি সদস্য ও স্থানীয়দের উপস্থিতিতে উদ্ধার করেন। আমরা প্রাণে রক্ষা পেয়ে গোলাপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসে চিকিৎসা গ্রহণ করি। আমরা এ ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির দাবি জানাই।
এব্যাপারে স্থানীয় ইউপি সদস্য মুজিবুর রহমান বলেন, ’পারিবারিক সমস্যা, এ বিষয়ে আমাদের চেয়ারম্যান সাহেব অবগত আছেন। বিচারে বসলে সমাধানের চেষ্টা করা হবে।’
সত্যতা নিশ্চিত করে চারখাই পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ফয়ছল আহমদ বলেন, ৯৯৯ এ কল পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
এব্যাপারে জানতে চারখাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হোসেন মুরাদ চৌধুরীকে কল দেয়া হলে তাঁর ব্যবহৃত মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।