মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলা ৫০ শয্যা হাসপাতালে গত চার দিন ধরে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। ফলে হাসপাতালের আবাসিক ওয়ার্ডে এবং জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন।
উপজেলা হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গত বুধবার (২২ জুন) দুপুরে হাসপাতালের পুরাতন ভবনের বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রণ প্যানেলে শর্টসার্কিটের জন্য ত্রুটি দেখা দেয়। এতে দুর্ঘটনা এড়াতে নিয়ন্ত্রণ প্যানেলের বিদ্যুৎ বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ।
বিষয়টি স্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগকে জানানো হয়। কিন্তু স্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় আবাসিক ওয়ার্ড, জরুরি বিভাগ, ল্যাব, যক্ষ্মা পরীক্ষা ইউনিট, ওষুধ শাখা, প্রসূতি অপারেশন থিয়েটার, চিকিৎসক ও নার্স রুম ও প্রশাসনিক শাখায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এতে চিকিৎসা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। রাতে জরুরি বিভাগ ও আবাসিক ওয়ার্ডে রোগীদের অন্ধকারে চরম বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে।
আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. জাকির হোসেন জানান, বুধবার থেকে হাসপাতালের বিদ্যুতের ত্রুটি দেখা দেওয়ায় কন্ট্রোল প্যানেলে মেইন সুইচসহ সব গুরুত্বপূর্ণ সুইচগুলো অতিরিক্ত গরম হয়ে যায়। এতে যে কোনো দুর্ঘটনা ঘটতে পারে এ আশঙ্কায় পুরো ভবনের বিদ্যুৎ বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরে বিদ্যুৎ বিভাগের লোক জানান, পুরো ভবনের ইন্টারনাল বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থায় ত্রুটি রয়েছে। এগুলো সংস্কার করতে হবে।
তিনি বলেন, বিষয়টি স্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগকে জানিয়েছি। কিন্তু এই মুহূর্তে বরাদ্দ না থাকায় হাসপাতালের বিদ্যুতের সংস্কার কাজ করা যাবে না বলে স্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগ জানিয়েছে। পরে ইউএনওকে বিষয়টি জানালে তিনি দ্রুত সেটা সংস্কারের উদ্যোগ নেন। ইতোমধ্যে তিনি অর্থ জোগাড় করে দিয়েছেন। বিদ্যুতের টেকনিশিয়ানরা কাজ শুরু করেছেন।
কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ফেরদৌস আক্তার জানান, বর্তমানে হাসপাতালের জরুরি ও আবাসিক বিভাগসহ বেশ কয়েকটি বিভাগে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। কাজটি শেষ হলে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হবে। দেরি হলে বিকল্প ব্যবস্থায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে। মেরামত কাজে কতক্ষণ লাগতে পারে এ ব্যাপারে নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না।
স্বাস্থ্য বিভাগের ঢাকাস্থ প্রধান প্রকৌশলীর কার্যালয়ের সহকারী প্রকৌশলী মো. মনিরুল হক জানান, কুলাউড়া হাসপাতালের পুরাতন ভবনের সংস্কার কাজ চলমান আছে। এই কাজে বিদ্যুতের সংস্কার কাজ করা হবে। পুরো ভবনের বিদ্যুতের কাজ করতে হলে নতুন করে টেন্ডারের মাধ্যমে বরাদ্দ করতে হবে। যেটি সময় সাপেক্ষ। আমি মৌলভীবাজারে দায়িত্বে ছিলাম। এ হাসপাতালের বিষয়টি জানা আছে। তারপরও খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করব।