হবিগঞ্জের মাধবপুরে এক নারী বিচ্ছেদের অন্তত ৩০ বছর পর প্রথম স্বামীর নামে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা করেছেন। ৩০ বছর পর স্বামীর নামে যৌতুক চাওয়ার অভিযোগ এনে মামলা করায় বিষয়টি নিয়ে কৌতুহল সৃষ্টি হয়েছে।
মামলার সুত্রে জানা যায়, মাধবপুর উপজেলার বহরা ইউনিয়নের দেওগাঁও গ্রামের মৃত শহীদ মিয়ার মেয়ে সালমা আক্তারের সঙ্গে প্রায় ৩০ বছর পূর্বে বিয়ে হয় মাধবপুর উপজেলার কমলানগর গ্রামের মোঃ জলফু মিয়ার ছেলে মোঃ মাতু মিয়ার সঙ্গে। বিয়ের পর তাদের একটি কন্যা সন্তানও হয়।
কয়েক বছর যেতে না যেতেই তাদের মধ্যে দাম্পত্য কলহের জেরে মাতু মিয়ার সংসার ছেড়ে চলে যান সালমা। পরবর্তীতে সালমা পারিবারিকভাবে বিয়ে করেন উপজেলার ঘিলাতলী গ্রামের আহাদ মিয়া নামে এক ব্যাক্তিকে। তবে সেই সংসারও টেকেনি সালমার।
আহাদ মিয়ার সাথে বিচ্ছেদের পর সালমার সঙ্গে মাতু মিয়ার পুনরায় যোগাযোগ শুরু হয়। সালমা তার মেয়ে জোনাকি আক্তারকে নিয়ে মাধবপুর বাজারে আলাদা বাসা ভাড়া করে থাকতে শুরু করে। সেখানে জোনাকি একটি বিউটি পার্লার খুলে ব্যবসা শুরু করে। এরপর একজন প্রবাসীর সঙ্গে জোনাকির বিয়ে ঠিক হলে মাতু মিয়া নিজের বাড়িতে বিয়ের আয়োজন করে জোনাকিকে বিয়ে দেয়।
তবে সম্প্রতি সালমা আক্তার বাদি হয়ে মাতু মিয়াকে আসামী করে হবিগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল -৩ এ একটি মামলা করেন। মামলায় উল্লেখ করা হয় মাতু মিয়া গত ২০২৩ সালের ১৭ মার্চ সালমার বাসায় এসে যৌতুক চেয়ে তাকে মারধোর করে। এতে স্বাক্ষী করা হয় সালমার বোন পারুল বেগমকে।
তবে পারুল জানান, তিনি মারধর করতে দেখেননি। একদিন সালমা এসে তাদের বলেছে মাতু মিয়া তাকে মারধোর করেছে।
অভিযোগকারী সালমা আক্তার জানান, মাতু মিয়া ব্যবসার কথা বলে সালমা ও তার মেয়ে জোনাকির কাছ থেকে কয়েক লক্ষ টাকা নিয়েছেন। ব্যবসার টাকার কোন লাভ দিচ্ছিল না মাতু মিয়া। পাওনা টাকার বিনিময়ে জোনাকির নামে ৪ শতক জায়গাও লিখে দেয় মাতু মিয়া।
মাতু মিয়া কে যে লাখ লাখ টাকা দিয়েছেন এই রকম কোন প্রমান আছে কিনা এমন প্রশ্নে তারা কোন উত্তর দিতে পাড়েনি।
অপরদিকে মাতু মিয়া জানান, সালমা আক্তার তার প্রথম স্ত্রী। বিয়ের পর তাদের মধ্যে নানা রকম ঝামেলা সৃষ্টি হলে উভয় পক্ষ বসে সালমার সঙ্গে তার ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। পরবর্তীতে সালমা ঘিলাতলী গ্রামের এক ব্যাক্তিকে বিয়ে করেন। ওই লোকের সঙ্গেও সালমার সংসার বেশীদিন টিকে নি। জোনাকির বিয়ের টিক হলে বাবা হিসাবে তাকে সম্মানের সহিত বিয়ে দেওয়া হয়। জোনাকির প্রবাসী স্বামী বড়জ্বালা এলাকার এক যুবককে বিদেশে নিবে বলে ৩ লাখ টাকা নেয়। এই টাকার জিম্মাদার মাতু মিয়া। জোনাকির স্বামী ওই যুবককে বিদেশ না নিলে জোনাকির স্বামীর সঙ্গে মাতু মিয়ার বিরোধ সৃষ্টি হয়। এর জের ধরে তারা মা, মেয়ে , মেয়ের জামাই মিলে পরিকল্পনা করে তার নামে যৌতুকের অভিযোগ এনে মামলা করেছে।