জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার কারণে গণপরিবহনে ভাড়া বাড়ানোর পর এবার রেলের ভাড়া সমন্বয়ের চিন্তা চলছে বলে জানিয়েছেন রেলপথমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন। এ বিষয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত কবে আসছে, সেটি জানাননি।
মঙ্গলবার দুপুরে টঙ্গী-গাজীপুর রুটে চলমান ডাবল লাইনের কাজ পরিদর্শনে গিয়ে জয়দেবপুর রেলওয়ে জংশনে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান তিনি।
মন্ত্রী বলেন, ‘নৌপথ এবং সড়কপথে পরিবহনের ভাড়া সমন্বয় করা হলেও তেলের দাম বৃদ্ধির কারণে রেলের ভাড়া বাড়ানোর বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে এ নিয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা চলছে।’
গত শুক্রবার মধ্যরাতে ডিজেলের দাম লিটারে ৩৪ টাকা বাড়ায় সরকার। এর আগে গত নভেম্বরে বাড়ানো হয় ১৫ টাকা। সে সময় পরিচালন ব্যয় বেড়ে গেলেও ভাড়া বাড়ায়নি রেলওয়ে।
ছয় বছর আগে রেলে শেষবার ভাড়া বেড়েছিল। রেলে সবশেষ ভাড়া বাড়ানো হয় ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে। সে সময় গড়ে ভাড়া বাড়ে ৭ শতাংশ। এতে কিলোমিটারপ্রতি ভাড়া বেড়ে হয় ৪০ পয়সার মতো।
এর চার বছর আগে ২০১২ সালে বাংলাদেশে ট্রেনের ভাড়া বাড়ানো হয় ৫০ শতাংশ। সে সময় কিলোমিটারপ্রতি গড় ভাড়া ২৪ পয়সা থেকে বাড়িয়ে করা হয় ৩৬ পয়সা।
তেলের দাম বাড়ানোর আগে রেলমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, কিলোমিটারপ্রতি যাত্রীপিছু তাদের খরচ ২ টাকা ৬০ পয়সার বেশি। এখন তা আরও বাড়বে।
বর্তমানে দূরপাল্লায় বাসে ভাড়া কিলোমিটারে ২ টাকা ২০ পয়সা আর ঢাকা ও চট্টগ্রাম নগর পরিবহনে আড়াই টাকা।
লঞ্চে ১০০ কিলোমিটার পর্যন্ত ভাড়া কিলোমিটারপ্রতি ২ টাকা ৩০ পয়সা। ১০০ কিলোমিটারের ঊর্ধ্বে ২ টাকা করে। তেলের দাম বাড়ায় এখন মালিকরা চাইছেন যথাক্রমে ৪ টাকা ৬০ পয়সা ও ৪ টাকা। তবে এই হারে ভাড়া দাবিকে যুক্তিযুক্ত মনে করছে না নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়। তাই এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত এখনও আসেনি।
এই হিসাবে রেল ভাড়া অন্যান্য যানবাহনের তুলনায় সবচেয়ে কম। আর যাত্রীপিছু খরচের চেয়ে কম আদায় করায় প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ লোকসান দিতে হয় সরকারি সংস্থাটিকে। সর্বশেষ ২০২০-২১ অর্থবছর ১ হাজার ৩৮৫ কোটি টাকা লোকসান গুনেছে তারা।