ব্লগার অনন্ত বিজয় ও শাফিউল ইসলামকে হত্যায় অভিযুক্ত সাতজনকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা দেওয়ায় বাংলাদেশ সরকারের নিন্দা জানিয়েছে আফগানিস্তানে সক্রিয় জঙ্গিগোষ্ঠী আল-কায়েদার ভারতীয় উপমহাদেশ শাখা (একিউআইএস)। গত রোববার নিষিদ্ধঘোষিত এই জঙ্গি সংগঠনের বিবৃতিতে নিন্দা জানানোর পাশাপাশি বাংলাদেশে হামলা চালানোরও হুমকি দেওয়া হয়েছে।
একিউআইএসের বিবৃতিতে বাংলাদেশ সরকারকে ‘হিন্দুত্ববাদ এবং তাগুতের আজ্ঞাবহ অ্যাজেন্ট’ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশ সরকার ইসলামবিদ্বেষীদের বিচারের আওতায় আনেনি। এর পরিবর্তে ‘নিরপরাধ’ ব্যক্তিদের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে। এই নিরপরাধ ব্যক্তিরা একিউআইএসের মুজাহিদিন ছিলেন, যারা ইসলামের অবমাননাকারীদের হত্যা করেছে।’
বাংলাদেশে হামলা চালানোর হুমকির একদিন পর দিল্লি, মুম্বাই, উত্তর প্রদেশ এবং গুজরাটে বোমা হামলার হুমকি দিয়েছে একিউআইএস। দেশটির ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) মুখপাত্র নুুপুর শর্মা মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) কে নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য করায় ভারতকে শিক্ষা দিতে এই হামলার হুমকি দেওয়া হয়েছে।
গত মাসে বিজেপির মুখপাত্রের ওই মন্তব্যের পর ভারতকে হুমকি দিয়েছে আল-কায়েদার ভারতীয় উপমহাদেশ শাখা। আর ব্লগার শাফিউল ইসলাম ও অনন্ত বিজয়কে ২০১৪ এবং ২০১৫ সালে হত্যার দায়ে সন্দেহভাজন অভিযুক্তদের সর্বোচ্চ সাজা দেওয়ায় বাংলাদেশে হামলার হুমকি এবং সরকারের নিন্দা জানিয়েছে এই জঙ্গিগোষ্ঠী।
বাংলাদেশ এবং ভারতে হামলার হুমকির পৃথক বিবৃতিতে আফগানিস্তান-পাকিস্তানে এই গোষ্ঠীর পুনরুত্থানের ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। গত বছরের ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সৈন্যরা চলে যাওয়ার পর এই দুই দেশে জঙ্গিগোষ্ঠী আল-কায়েদার তৎপরতা বৃদ্ধি পেয়েছে। আল-কায়েদা প্রধান আয়মান আল-জাওয়াহিরি তালেবানের সহায়তায় আফগানিস্তানে অবস্থান করছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। যদিও আল-কায়েদা এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা পরিকল্পনাকারীদের মতে, ভারত এবং বাংলাদেশের বিরুদ্ধে একিউআইএসের হামলার হুমকি পাকিস্তানের ষড়যন্ত্রে ব্লাসফেমির অভিযোগে নয়াদিল্লি এবং ঢাকাকে ইসলামপন্থীদের লক্ষ্যবস্তু করার একমাত্র উদ্দেশ্য নিয়ে সাজানো হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গত কয়েকদিনের বিভিন্ন ধরনের বিতর্ক বিশ্লেষণ করে ভারত ও বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নতুন এই অ্যাজেন্ডা পাকিস্তান থেকে পরিচালনার ইঙ্গিত পাওয়া গেছে বলে ভারতীয় নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা ইঙ্গিত দিয়েছেন। তারা বলছেন, ভুয়া অ্যাকাউন্ট ও বট ব্যবহার করে টুইটারে এ ধরনের অ্যাজেন্ডার প্রচারণা চালানো হচ্ছে।