ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দিলো স্পেন-নরওয়ে-আয়ারল্যান্ড

অবশেষে আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দিয়েছে ইউরোপের তিন দেশ স্পেন, নরওয়ে ও আয়ারল্যান্ড। যদিও ইউরোপীয় তিন দেশের এই সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ইসরায়েল। তেল আবিব বলেছে, সাত মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা গাজা যুদ্ধের মাঝে স্পেন, নরওয়ে ও আয়ারল্যান্ডের এমন সিদ্ধান্ত হামাসের জন্য পুরস্কার।

ইউরোপের এই তিন দেশ মনে করে, তাদের এমন সিদ্ধান্তের শক্তিশালী প্রতীকী প্রভাব রয়েছে; যা অন্যান্যদের অনুসরণে উৎসাহ জোগাবে।

মঙ্গলবার (২৮ মে) ফিলিস্তিনকে নরওয়ের আনুষ্ঠানিকভাবে রাষ্ট্রের স্বীকৃতির ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসপেন বার্থ এইড। এই পদক্ষেপকে ‌‌‘নরওয়ে-ফিলিস্তিন সম্পর্কের জন্য বিশেষ দিন’ বলে অভিহিত করেছেন তিনি।  এসপেন বলেছেন, ‘৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের সবচেয়ে উৎসাহী রক্ষকদের অন্যতম নরওয়ে।’

নরওয়ের ঘোষণার কিছুক্ষণ পরই স্পেনও ফিলিস্তিনকে আনুষ্ঠানিকভাবে রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দিয়েছে। স্পেনের সরকারের মুখপাত্র পিলার অ্যালেগ্রিয়া নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, মন্ত্রিসভা আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দিয়েছে। একই সঙ্গে মন্ত্রিসভার সদস্যরা এটাকে ‘এক ঐতিহাসিক দিন’ বলে অভিহিত করেছেন।

এর আগে, স্প্যানিশ প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো স্যানচেজ বলেন, এই ধরনের স্বীকৃতি শান্তির জন্য অপরিহার্য। তবে তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, তার দেশের এই পদক্ষেপ ‘‘কারও বিরুদ্ধে নয়, বরং ইসরায়েলের বিরুদ্ধে।‘ ইসরায়েলের পাশে শান্তি ও নিরাপত্তার সাথে বসবাস করার একমাত্র উপায় এই ভবিষ্যৎ ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র।

তিনি বলেন, স্পেনের এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানের বিরোধী হামাসকেও সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। যাদের ৭ অক্টোবরের কর্মকাণ্ডের কারণে গাজা যুদ্ধের সূচনা হয়েছে।

একইভাবে মঙ্গলবার আয়ারল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইকেল মার্টিন ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, `আয়ারল্যান্ড আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। একই সঙ্গে ফিলিস্তিনের সাথে পূর্ণাঙ্গ কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করেছে আয়ারল্যান্ড।‘

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া বার্তায় তিনি বলেছেন, আয়ারল্যান্ডের সরকারের আজকের সিদ্ধান্ত ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের সাথে পূর্ণ কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনেরও অনুমতি দেয়। ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের আনুষ্ঠানিক অনুরোধের ভিত্তিতে আয়ারল্যান্ডে ফিলিস্তিনি মিশনের মর্যাদা দূতাবাসে উন্নীত করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি ফিলিস্তিন রাষ্ট্র থেকে আয়ারল্যান্ডে একজন রাষ্ট্রদূত নিয়োগ করা হবে।

মার্টিন বলেছেন, ‘ফিলিস্তিনের স্বীকৃতি একটি প্রক্রিয়ার শেষ নয়; বরং শুরু। এটা আমাদের দীর্ঘস্থায়ী পারস্পরিক উন্নয়ন সহযোগিতা কর্মসূচির গুরুত্ব তুলে ধরে।

মন্ত্রিসভার সদস্যদের সাথে বৈঠকের আগে মঙ্গলবার আয়ারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী সাইমন হ্যারিস বলেছিলেন, ‘এটা একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত। কারণ একটি দেশ হিসাবে দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানের আশা বাঁচিয়ে রাখতে সহায়তা করার জন্য এমন একটি বাস্তব পদক্ষেপ যে নেওয়া যায়, এই সিদ্ধান্ত সেই বার্তা দেবে।‘