‘মার্কা নয়, ব্যক্তি ইমেজ দেখে মানুষ আমাকে ভোট দিয়েছেন। বিগত বছরগুলোর উন্নয়ন বঞ্চনা আর শোষণের কবল থেকে বাঁচতেই নেতৃত্বে পরিবর্তন চেয়েছে পৌরবাসী। তাই শাসক নয়, সারাজীবন মানুষের সেবক হয়ে থাকতে চাই।’
সিলেটের বিয়ানীবাজার পৌরসভা নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা শেষে তাৎক্ষনিক প্রতিক্রিয়ায় এমন প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন নবনির্বাচিত মেয়র ফারুকুল হক।
পৌর নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ব্যাপারে তিনি বলেন, সাম্প্রতিককালে দেশে ফিরে দলের নেতাকর্মী ও এলাকার গণ্যমান্যদের নিয়ে বৈঠক করে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। দলীয় প্রতীকে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের আমেজ অনেকটা সংসদ নির্বাচনের মতো। তাই নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করতে পারা গৌরবের বিষয়। দলের কাছে মনোনয়ন চেয়েছিলাম আমি, কিন্তু মূল্যায়ন পাইনি। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মানুষের ভালোবাসা-ভাললাগার প্রতীক চামচ নিয়ে নির্বাচন করে জয়লাভ করেছি।
ফারুকুল হক আরও বলেন, ঝড়-বৃষ্টি না হলে আমি আরও বেশি ভোটের ব্যবধানে জয়ী হতে পারতাম। নির্বাচনে আমি বিজয়ী হইনি, হয়েছে ন্যায়ের পক্ষের ও অন্যায়ের প্রতিবাদের বিজয়।
তিনি বলেন, আমার নিজস্ব কোনো শক্তি নেই। বিয়ানীবাজার পৌরবাসী সবাই ঐক্যবদ্ধ হওয়ায় আমি শক্তিশালী হয়েছি।
তিনি একটি স্বচ্ছ ও সুন্দর নির্বাচন উপহার দেওয়ায় ভোটের সাথে সংশ্লিষ্ট সকলকে অভিনন্দন জানান।
বিজয়ী মেয়র দেশ-বিদেশ থেকে সহযোগিতাকারী এবং পরিবর্তনের পক্ষে রায় প্রদানকারী ভোটারদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি জনরায়ের মর্যাদা রক্ষায় সর্বোচ্চ চেষ্টা করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন। পাশাপাশি পৌরসভার সকল উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে পরামর্শ ও সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন নবনির্বাচিত মেয়র জি এস ফারুকুল হক।
গতকাল বুধবার (১৫ জুন) অনুষ্ঠিত বিয়ানীবাজার পৌর নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন জি এস ফারুকুল হক। চামচ প্রতীক নিয়ে ৪১০০ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন তিনি। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মোবাইল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুস সবুর পান ২৩১৮ ভোট। তৃতীয় অবস্থানে ছিলেন সদ্য বিদায়ী মেয়র এবং আওয়ামী লীগের প্রার্থী নৌকা প্রতীকের মো. আব্দুস শুকুর। তিনি পেয়েছেন ২২৭০ ভোট।
উল্লেখ্য, বিয়ানীবাজার সরকারি কলেজ ছাত্র সংসদের ‘৯৪ এর জিএস ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম-সম্পাদক ছিলেন ফারুকুল হক। পাশাপাশি তিনি নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতির দায়িত্বেও রয়েছেন। সদ্য সমাপ্ত পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে দলের বিদ্রোহী হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় লিপ্ত হওয়ায় তাকে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়।