পুলিশ কনস্টেবল পদে চাকরি দেওয়ার নাম করে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে সিলেটের কানাইঘাট উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এবং সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মস্তাক আহমদ পলাশসহ চারজনের বিরুদ্ধে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।
শনিবার (১৭ আগস্ট) কানাইঘাট লক্ষীপ্রসাদ পূর্ব ইউনিয়নের ছোটফৌদ গ্রামের মৃত বীরমুক্তিযোদ্ধা সামছ উদ্দিন চৌধুরীর ছেলে যুবদল নেতা ইকবাল বাহার চৌধুরী বাদী হয়ে এই ডায়েরি করেন। কানাইঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর হোসেন সরদার জিডি দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জিডিতে মস্তাক আহমদ পলাশ ছাড়াও উপজেলা আওয়ামী লীগের অর্থ-সম্পাদক ও লক্ষীপ্রসাদ পূর্ব ইউপি চেয়ারম্যান তমিজ উদ্দিন, সাতবাক ইউনিয়নের জুলাই আগরচটি গ্রামের মৃত মখদ্দছ আলীর ছেলে এবাদুর রহমান ও একই উপজেলার ডাউকেরগুল (বাংলাটিলা) গ্রামের মৃত মড়া মিয়ার ছেলে সাবেল আহমদতক অভিযুক্ত করা হয়েছে।
ইকবাল আহমদ চৌধুরী সাধারণ ডায়রীতে উল্লেখ করেন, ৫ বছর পূর্বে তার ছেলে সামছুদোহা চৌধুরী বিপ্লব উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মস্তাক আহমদ পলাশের কাছে ৫০ শতক জমি ৩ লক্ষ টাকা মূল্য নির্ধারণ করে দলিল মূলে বিক্রি করেন। জমি বিক্রির ৬০ হাজার টাকা মস্তাক আহমদ পলাশ প্রদান করেন এবং অবশিষ্ট ২ লক্ষ ৪০ হাজার টাকার একটি চেকপাতা প্রদান করেন।
এদিকে জমি বিক্রির কিছুদিন পর পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগ প্রকাশ হলে মস্তাক আহমদ পলাশ ও ১নং লক্ষীপ্রসাদ পূর্ব ইউপি চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা তমিজ উদ্দিন ইকবাল বাহার চৌধুরীকে বলেন তুমি মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান, ৭ লক্ষ টাকা দিলে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় তোমার ছেলে সামছুদোহা চৌধুরী বিপ্লবকে পুলিশ কনস্টেবল পদে চাকুরীর ব্যবস্থা করে দিব। তাদের কথামতো ইকবাল বাহার চৌধুরী ছেলের চাকুরীর জন্য মস্তাক আহমদ পলাশ ও তমিজ উদ্দিনকে ৫ লক্ষ টাকা প্রদান করলেও তার ছেলের পুলিশের চাকরি হয়নি। এতে ইকবাল বাহার চৌধুরী জমি বিক্রির পাওনা ও পুলিশ চাকরির জন্য দেয়া মোট ৭ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা মস্তাক আহমদ পলাশ ও তমিজ উদ্দিনের কাছে বার বার ফেরত চাওয়ার পরও তারা পাওনা টাকা দেননি। উল্টো তাদের লোকজন দিয়ে ইকবাল বাহার চৌধুরীকে মারধরের চেষ্টাসহ প্রাণ নাশের হুমকি দেয়ার কথা জিডিতে উল্লেখ করা হয়।
এ বিষয়ে ইকবাল বাহার চৌধুরী বলেন, ‘থানায় তিনি উপজেলা চেয়ারম্যান মস্তাক আহমদ পলাশ ও ইউপি চেয়ারম্যান তমিজ উদ্দিনসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে জিডি করেছেন। পরবর্তীতে তাদের বিরুদ্ধে তথ্য প্রমাণসহ মামলা দায়ের করবেন। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকায় বিগত ১৭ বছরে তারা অবৈধভাবে শত শত কোটি টাকার মালিক হয়েছেন বলেও দাবি করেন তিনি।’
কানাইঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর হোসেন সরদার জিডির বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ‘জিডির অভিযোগ তদন্ত সত্য প্রমাণিত হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
এ ব্যাপারে উপজেলা চেয়ারম্যান মস্তাক আহমদ পলাশ ও ইউপি চেয়ারম্যান তমিজ উদ্দিনের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাদের মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।