সুনামগঞ্জে টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে দ্রæত গতিতে বাড়ছে সকল নদ-নদীর পানি। এতে প্রতিনিয়ত আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন জেলার ২৫ লাখেরও বেশি মানুষ। সেই সাথে ঢলের পানিতে যেকোন সময় নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে ৫ লক্ষাধিকেরও বেশি মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়তে পারেন।
তবে আশার কথা হচ্ছে সুনামগঞ্জে এখনও বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে সুরমা নদীর পানি। কিন্তু জেলার ছাতক উপজেলার সুরমা নদীর পয়েন্ট দিয়ে নদীর পানি বিপদসীমার ৪৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে এখন পর্যন্ত এই উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়নি।
প্রতি বছরই এ জেলায় অতি বৃষ্টি থেকে শুরু করে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের চেরাপুঞ্জি থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। তারপরও এই দুযোর্গ মোকাবেলা করে দিন পার করেন হাওর পাড়ের মানুষ জন।
এই অঞ্চলের নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেলে আতঙ্ক আর উৎকন্ঠা বাড়ে জেলার ২৫ লাখেরও বেশি মানুষের। ভারতের চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জের সুরমা, কুশিয়ারা, রক্তি, বৌলাই ও যাদুকাটা নদীর পানি দ্রুত গতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে চরম দুশচিন্তায় সময় পার করছেন হাওর অঞ্চলের মানুষরা।
কারণ ২০২২সালের ১৬ জুনের বন্যা মোকাবিলা করে তাদের পুরনো অভিজ্ঞতার কথা মনে হলে এখনও অনেকেই আতকে উঠেন।
এদিকে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর, বিশ্বম্ভরপুর, ধর্মপাশা ও মধ্যনগরসহ বেশ কয়েকটি উপজেলার বেশিরভাগ মানুষ একদম সীমান্তের নিকটবর্তী এলাকায় বসবাস করেন।
ফলে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে প্রথমে এইসব উপজেলার গ্রামগুলো প্লাবিত হাওয়ার শঙ্খা রয়েছে।
সেই গ্রামাঞ্চলের সকল রাস্তাঘাট ডুবে গেলে পানিবন্ধী হয়ে চরম বিপাকে পড়তে পারেন ওই অঞ্চলের ৫ লক্ষাধিকেরও বেশি মানুষ।
সেই সাথে নদ-নদীর পানি বাড়তে থাকায় নিম্নঅঞ্চলের মানুষ উঁচু স্থানে ছুটছেন এবং শহরের মানুষ এক তালা থেকে দুই তলা বাসায় উঠার জন্য গাড়ি পথ ও টেলাগাড়ি দিয়ে আসবাবপত্র নিয়ে যাচ্ছেন।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডে জানায়, গত ২৪ ঘন্টায় সুনামগঞ্জে ৭০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এ দিকে ভারতের মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জিতে ৬৭০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।
ফলে সুনামগঞ্জের নদ-নদীর পানি ২৮ সেন্টিমিটার মিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৫৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
সুনামগঞ্জ পানি বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার জানান,সুনামগঞ্জে নদ-নদীর পানি বাড়ছে। এতে আতংকিত হওয়ার কিছু নেই। কারণ জেলার অনেক হাওর এখন খালি আছে সেখানে গিয়ে পানি জমবে। তবে জেলায় কোনোও বন্যার শঙ্কা নেই।