কাপ্তাই হ্রদের পানি বেড়ে তলিয়ে গেছে রাঙামাটির ঝুলন্ত সেতু। সম্প্রতি বৃষ্টিপাতে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে কাপ্তাই হ্রদের পানির উচ্চতা বেড়ে গেছে। এতে তলিয়ে গেছে রাঙামাটি পর্যটন কমপ্লেক্সে অবস্থিত আকর্ষণী ঝুলন্ত সেতুটির পাটাতন।
রবিবার (৩ সেপ্টেম্বর) সেতুটির পাটাতন আধা ফুট পানির নিচে তলিয়ে যায়। তলিয়ে যাওয়ায় সেতুটির ওপর দিয়ে চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন রাঙামাটি পর্যটন মোটেল ও হলিডে কমপ্লেক্সের ব্যবস্থাপক আলোক বিকাশ চাকমা।
তিনি জানান, পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় সেতুটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পানি শুকিয়ে গেলে তখন খুলে দেওয়া হবে। বিষয়টি জেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে।
তিনি আরও জানান, প্রতিবছর আগস্ট-সেপ্টেম্বর মাসে কাপ্তাই হ্রদের পানি বেড়ে গেলে ঝুলন্ত সেতু ডুবে যায়। রবিবার থেকে সেতুটি ডুবছে। ইতোমধ্যে প্রায় আধা ফুট পানির নিচে তলিয়েছে ঝুলন্ত সেতুর পাটাতন। এছাড়া পাটাতন ডুবে যাওয়ায় সেতুটির দিকে পর্যটকদের প্রবেশে অস্থায়ীভাবে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
এদিকে ঝুলন্ত সেতু ডুবে যাওয়ায় আকর্ষণ হারিয়েছে রাঙামাটিতে আগত পর্যটকদের। মন খারাপ করে ফিরে যাচ্ছেন পর্যটকরা। পর্যটকদের অনেকে বলেন, ঝুলন্ত সেতু উপভোগ করতে রাঙামাটি ঘুরতে যান তারা। কিন্তু ইতোমধ্যে সেতুর পাটাতন তলিয়ে যাওয়ায় তা আর হয়ে উঠল না।
এদিকে কাপ্তাই হ্রদের বর্তমানে পানির উচ্চতা ১০৫ দশমিক ৬ ফুট রয়েছে বলে জানা গেছে। রুলকার্ভ অনুযায়ী হ্রদে সর্বোচ্চ পানি ধারণ ক্ষমতা ১০৯ ফুট। তবে ১০৭ ফুট অতিক্রম করলে বিপদসীমা ধরা হয়।
জানা যায়, ১৯৭০ সালের দিকে সরকার রাঙামাটি পার্বত্য জেলাকে পর্যটন এলাকা ঘোষণা করে। ১৯৮৬ সালে জেলা সদরে সরকারি পর্যটন মোটেল ও হলিডে কমপ্লেক্স স্থাপন করা হলে সেখানে ৩৩৫ ফুট দৈর্ঘ্যর মনোরম ঝুলন্ত সেতুটি নির্মাণ করা হয়। পর্যটকদের আকর্ষণে কাপ্তাই হ্রদের পানিতে বিচ্ছিন্ন দুটি পাহাড়ে পারাপারে মাঝখানে সেতুটি নির্মাণ করে বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন। সেতুটি বর্তমানে দেশে বিদেশে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেছে। ঝুলন্ত সেতুর পূর্বদিকে কাপ্তাই হ্রদের স্বচ্ছ জলরাশিসহ রয়েছে ছোটবড় নৈসর্গিক সবুজ পাহাড়মালা।