
কুয়েতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল মো. আশিকুজ্জামান বলেছেন, ‘বাংলাদেশ সরকার সবসময় দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স। পাপুল কুয়েতে কোনো সরকারি কাজে আসেনি। একজন সাধারণ ব্যবসায়ী হিসেবে ছিলেন। বাংলাদেশি হিসেবে আমাদের কাছে কখনোই সহযোগিতা চাননি। তার রায়ের ব্যাপারে আমাদের কিছুই করার নেই।’
তিনি বলেন, ‘সংসদ সদস্য কাজী শহিদ ইসলাম পাপুল ব্যবসায়ী হিসেবে অর্থ পাচার, মানবপ্রচার ও অবৈধ অর্থ ঘুষ লেনদেনের দায়ে কুয়েত প্রশাসন আটক করে একটি মামলায় ৪ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন। এই বিষয়ে আমাদের কাছে দাফতরিকভাবে কাগজপত্র আসেনি। স্থানীয় পত্রিকার মাধ্যমে যতটুকু জেনেছি ঘুষ লেনদেনের দায়ে পাপুলসহ স্থানীয় একজন নাগরিকের অর্থদণ্ড দিয়েছেন দেশটির আদালত।
রাষ্ট্রদূত বলেন, অর্থ পাচার ও মানবপাচার আরও দুইটি মামলা চলমান রয়েছে কুয়েতের আদালতে। তার মামলার কি রায় হয় বা হবে সেই ব্যাপারে আমাদের কিছুই করার নেই। এটা সম্পূর্ণ কুয়েত প্রশাসনের বিষয়।
উল্লেখ্য, গত বছর ৬ জুন কুয়েতের মুশরেফ এলাকায় তার বাসা থেকে স্থানীয় প্রশাসন আটক করে। গতকাল কুয়েতের ফৌজদারি আদালতের বিচারক আবদুল্লাহ আল ওসমান এই রায়ে ৫৩ কোটি ২১ লাখ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ও চার বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন।
ওই সময় গালফ নিউজের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, পাপুলের বিরুদ্ধে কুয়েতের সরকারি কৌঁসুলিরা তিনটি অভিযোগ তুলেছেন। অভিযোগগুলো হলো- মানবপাচার, অবৈধ মুদ্রাপাচার এবং স্বদেশী কর্মীদের কাছে রেসিডেন্ট পারমিট বিক্রি।
পাঁচ বাংলাদেশি তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলার পর পাপুলকে গ্রেফতার করা হয়। ওই বাংলাদেশিরা জানান, পাপুল তাদের কুয়েতে পাঠানোর জন্য প্রত্যেকের কাছে সোয়া আট লাখেরও বেশি করে টাকা নিয়েছেন। এছাড়া রেসিডেন্সি ভিসা নবায়নের জন্য প্রতি বছর পাপুলকে নতুন করে অর্থ প্রদান করতে হতো তাদের।
লক্ষ্মীপুর-২ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য পাপুলের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলোর মধ্যে উল্লেখ করা হয়েছে যে, তিনি কুয়েতে সরকারি কর্মকর্তাদের ঘুষ হিসেবে পাঁচটি বিলাসবহুল গাড়ি সরবরাহ করেছিলেন, যাতে তিনি সেখানে যে সংস্থাটি চালাচ্ছিলেন তার চুক্তি পেতে পারেন।
কুয়েতের গণমাধ্যমও তার বিরুদ্ধে ভিসা বাণিজ্য ও অবৈধ অর্থপাচারের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে সেই অর্থ পাঠানোর অভিযোগ তুলেছে। একটি সূত্রের বরাতে মিডল ইস্ট মনিটর জানিয়েছে, ওই ঘটনায় জড়িত সন্দেহভাজন তিন সদস্যের মধ্যে একজন বাংলাদেশি এমপি রয়েছেন, যার স্ত্রীও একজন এমপি (সংরক্ষিত আসন)।