এবারের ভোটের অনিয়মকে সম্প্রতি ‘সব ডাকাতির মা’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছিল ইমরান খানের দল পিটিআই। এবার কারাবন্দী ইমরান খান বার্তা দিয়েছেন- সব ডাকাতির মাকে এখনই থামানো উচিত। কারণ পাকিস্তান বিশ্বজুড়ে হাসির পাত্র হয়ে গেছে।
আজ মঙ্গলবার আদিয়ালা জেলে ইমরান খানের সঙ্গে দেখা করার পর তাঁর বক্তব্য গণমাধ্যমের কাছে তুলে ধরেন বোন আলিমা খান।
এ বিষয়ে ট্রিবিউন এক্সপ্রেসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এবাবের ভোটের প্রক্রিয়াকেই ‘সব ডাকাতির মা’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন পিটিআই প্রতিষ্ঠাতা। কারণ নির্বাচনের আগেই পিটিআই-এর ওপর নির্মম নির্যাতন শুরু করেছিল সরকারি বাহিনীগুলো। নির্বাচনে দলের ‘ব্যাট’ প্রতীকও ছিনিয়ে নেওয়া হয়। এ অবস্থায় বিভিন্ন এলাকায় দলের সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মনোনয়নও জমা দিতে দেওয়া হয়নি। অনেক প্রার্থীকে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াতে বাধ্য করা হয়েছে। এমনকি প্রার্থীদের প্রচারণায়ও বাধা প্রদান করা হয়েছে।
আজ ইমরান খানের সঙ্গে দেখা করার পর আদিয়ালা জেলের বাইরে এসে তাঁর বোন আলিমা খান গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি জানান, তাঁর ভাই চান- পাকিস্তানে দায়মুক্তি সংস্কৃতির অবসান হোক এবং আন্তর্জাতিকভাবে দেশের খ্যাতি রক্ষায় জনগণের আদেশকে সম্মান করা হোক।
ইমরান তাঁর প্রধান বিরোধী পক্ষ নওয়াজ শরীফের দল পিএমএল-এনকেও উপহাস করেছেন। দাবি করেছেন, দলটি স্বেচ্ছায় ক্ষমতা গ্রহণের জন্য সব নীতি আদর্শ বিসর্জন দিয়েছে। ইমরান খান বলেছেন, ‘ভোটের সম্মান না দিয়ে তারা বুটকে (সেনাবাহিনীর জুতো) সম্মান করেছে।’
ইমরান খান দাবি করেছেন, একটি দলের প্রার্থীদের নির্বাচিত করার জন্য নির্বাচকেরা তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলাগুলো বাদ দিয়েছে। আর বিপরীতে তাঁকে অদৃশ্য অভিযোগে ৩২ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে।
ইমরান মনে করেন- নির্বাচনের আগে, নির্বাচনের দিন এবং নির্বাচনের পর কারচুপির মধ্য দিয়ে পাকিস্তানের জনগণের প্রতিনিধি বাছাই করার গণতান্ত্রিক অধিকারকে অস্বীকার করা হয়েছে।
আলিমা খানের ভাষ্য অনুযায়ী ইমরান খান বলেছেন, ‘ভোটের দিন ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। মানুষ হতাশ হয়ে পড়েছিল। কিন্তু যখন তা কাজ করেনি, তখন ফরম-৪৫ উপেক্ষা করে নির্লজ্জভাবে ফলাফল পরিবর্তন করে ভোট পরবর্তী কারচুপি অনুষ্ঠিত হয়েছে।’
ভোট কারচুপির মাধ্যমে পিএমএল-এনকে আসন পাইয়ে দেওয়ার কথা স্বীকার করে পদত্যাগ করা রাওয়ালপিন্ডির কমিশনারের কথাও উল্লেখ করেছেন ইমরান খান। তিনি বলেছেন, ‘শুধু একজন কমিশনার নন, আরও অনেকের কাছে কারচুপির যথেষ্ট প্রমাণ আছে। কিন্তু তাদের নীরব করা হয়েছে।’
পদত্যাগ করা রাওয়ালপিন্ডির কমিশনার শারীরিক নির্যাতনের শিকার হতে পারেন বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন পিটিআই প্রতিষ্ঠাতা।