শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের উদ্যোগে ‘নৃবিজ্ঞানের চোখে করোনা অতিমারির ভেতর-বাহির’ বিষয়ের উপর রজত জয়ন্তী বক্তৃতামালা-২ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রবিবার (১১ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে তিনটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে এ বক্তৃতামালা অনুষ্ঠিত হয়।
নৃবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান আ ফ ম জাকারিয়ার সভাপতিত্বে ও সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ জাবেদ কায়সার ইবনে রহমানের সঞ্চালনায় মূল বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাজ্যের সাসেক্স বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল এনথ্রোপলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. শাহাদুজ্জামান এবং রজত জয়ন্তী বক্তৃতামালার আহ্বায়ক হিসেবে বক্তব্য দেন নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক একেএম মাজহারুল ইসলাম।
এসময় ড. শাহাদুজ্জামান বলেন, করোনায় আমেরিকাতে সবচাইতে বেশি মানুষ মারা গেছে। এর কারণ তারা লকডাউন মানে নি ও মাস্ক পরিধান করে নি। তাদের মূলনীতি ছিল এটি মানবাধিকারের লঙ্ঘন। এটি মানুষের ব্যক্তিগত পছন্দের লঙ্ঘন। আমি মাস্ক পড়ব কি পড়ব না এটা আমার সিদ্ধান্ত। এটি নিয়ে তারা প্রতিবাদী মিছিল করেছে এই বলে ‘আমি লকডাউনে থাকবো না, আমি মাস্ক পড়বো না’।
তিনি বলেন, যখন কোনো মহাবিপদে আমরা থাকি তখন নিজের পছন্দের মূল্য বেশি না সামষ্টিক পছন্দের মূল্য বেশি সে বিষয়কে গুরুত্ব দিতে হবে। করোনার সময় বহু তৃতীয় বিশ্বের দেশ আছে তারা সামষ্টিক পছন্দকে গুরুত্ব দেওয়ায় করোনার বিস্তার রোধ করতে পেরেছে।
তিনি আরো বলেন, করোনার সময় মানুষ প্রথমে ভাবছিল এটা বিদেশীদের রোগ এটা আমাদের কিছু করবে না। আমরা যদি ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলি তাহলে এ রোগ আমাদের হবে না। যখন বিদেশের গন্ডি পেরিয়ে দেশের বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে করোনা দেখা দিলো তখন মানুষের মধ্যে সেই ধারণা পরিবর্তন হয়ে যায়।
বাংলাদেশে প্রথম যে লকডাউন দেওয়া হয়েছিল সেটির সমালোচনা করে তিনি বলেন, আমাদের প্রথম যে লকডাউন দেওয়া হয়েছিল সেটাকে লকডাউন না বলে বলা হয়েছিল ‘ছুটি’। এটা খুব বিভ্রান্ত করা হয়েছিল। পৃথিবীর আর কোথাও ছুটি বলা হয়নি। একমাত্র বাংলাদেশে বলা হয়েছিল ছুটি। এই ছুটি বলার কারণে মানুষের মধ্যে আসল গুরুত্ব আসে নি। সেটার কারণে ব্যাপক করোনা বাড়তে থাকে। মানুষ যখন সমস্যাকে বর্ণনা করতে পারে না তখন আতঙ্ক আরো বেড়ে যায়।
অনুষ্ঠানে নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক ও বিভিন্ন বর্ষের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।