নাশকতার আশঙ্কায় দেশজুড়ে কয়েকটি রুটে দশটি ট্রেন চলাচল বন্ধ করা হয়েছে। এছাড়া রেলের নিরাপত্তা জোরদার করতে ২ হাজার ৭০০ আনসার সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
শুক্রবার (২২ ডিসেম্বর) কমলাপুর রেলস্টেশনে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান রেলওয়ের ডিভিশনাল ম্যানেজার শফিকুর রহমান।
তিনি বলেন, নাশকতার আশঙ্কায় এখন পর্যন্ত পাঁচ জোড়া ট্রেন বন্ধ করা হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা থেকে নারায়ণগঞ্জ, ময়মনসিংহ থেকে ভূয়াপূর, জামালপুর থেকে সরিষাবাড়ী ও যমুনা এক্সপ্রেস আংশিক বন্ধ করা হয়েছে। এগুলো রিমোট এরিয়া এবং রাত্রিকালীন যাত্রা হওয়াতে কোনো দুর্ঘটনা যেন না ঘটে, তাই বন্ধ করা হয়েছে।
শফিকুর রহমান বলেন, রেলওয়ে নিরাপত্তা বাড়াতে অ্যাডভান্স পাইলটিং করা হচ্ছে। পাশাপাশি রেলওয়ের নিরাপত্তা বাহিনী তাদের স্থাপনাগুলো পর্যবেক্ষণ করছেন।২০১৪ সালে যেসব যেসব জায়গায় নাশকতা হয়েছিল, সেসব জায়গাগুলোতেই নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। কারণ সমগ্র লাইনের কোথায় কোথায় নাশকতা হতে পারে তা আগাম বলা সম্ভব না।
আনসার মোতায়েন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় স্থানীয় পর্যায়ে আনসার মোতায়েন করা হয়েছে। যেহেতু নাশকতার ধরন চেঞ্জ হয়েছে, সেহেতু আরও আনসার মোতায়েন করা হতে পারে। ইতোমধ্যেই ২ হাজার ৭০০ আনসার মাঠপর্যায়ে মোতায়েন করা হয়ে গেছে।
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) ভোরে রাজধানীর তেজগাঁও স্টেশনে নেত্রকোণা থেকে ছেড়ে আসা ‘মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস’ ট্রেনের তিনটি বগিতে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। এতে এক নারী ও তার শিশুসন্তানসহ চার যাত্রী দগ্ধ হয়ে মারা যান। সকাল ৬টা ৪৫ মিনিটে ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নেভায়।
ওই ঘটনার রেশ না কাটতেই বুধবার (২০ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় ব্রহ্মপুত্র এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। যদিও প্রাথমিকভাবে রেলওয়ে পুলিশের ধারণা, সেটি কোনো নাশকতা ছিল না। ইঞ্জিনের সাইলেন্সার পাইপ থেকে নির্গত ধোঁয়া চটের বস্তায় বাধাগ্রস্ত হয়ে আগুন লাগে। সঙ্গে সঙ্গে তা নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।
মূলত রেলপথে এসব নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড রুখতে নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। সে ধারাবাহিকতায় রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ রেলস্টেশনগুলোতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।