সিলেটে ‘নারী সেজে থাকা যুবক’ তুষার আহমদ (২০) হত্যার অভিযোগে তৃতীয় লিঙ্গের ৬ গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সোমবার (সেপ্টেম্বর) পৃথক অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে কোতোয়ালি থানা পুলিশ।
তুষারের ভাই হিমেল আহমদ রাফির করা মামলার প্রেক্ষিতে রোববার রাতে অভিযান চালিয়ে চারজন ও আজ সোমবার আরও ২ জনসহ তৃতীয় লিঙ্গের মোট ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আলী মাহমুদ। তিনি জানান, রবিবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন তুষারের ভাই হিমেল আহমদ রাফি।
গ্রেপ্তারকৃতরা হচ্ছেন- সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার ছােটদেশ গ্রামের মৃত মনাই মিয়ার সন্তান হৃদয় (২৮), ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া থানার মৃত সিদ্দিক মিয়ার সন্তান তানহা (২৫), সুনামগঞ্জ জেলার দিরাই থানার হােসেনপুর গ্রামের মৃত এমরাজুল হকের সন্তান সুমি উজ্জল (১৮), হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট থানার পাঁচগাঁও গ্রামের মৃত কনাই মিয়ার সন্তান চাঁদনী সজল (৩০), পাপ্পু পাপিয়া ও হৃদয় রুপা।
এর মধ্যে পাপ্পু পাপিয়া ও হৃদয় রুপা ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী বলে জানিয়েছেন ওসি আলী মাহমুদ।
তিনি বলেন- ‘আমরা বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে প্রথমে রোববার দিবাগত রাতে চারজনকে গ্রেপ্তার করি এবং তাদের দেওয়া তথ্যমতে আজ সোমবার পরিকল্পনাকারী দুজনকে গ্রেপ্তার করি।’
ওসি জানান- ‘প্রথমে গ্রেপ্তার করা ৪ জন প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে আমাদের কাছে স্বীকারোক্তি দিয়েছে। তাদের সোমবার বিকেলে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। আর বাকি দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তাদের মঙ্গলবার আদালতে প্রেরণ করা হবে। মূলত তাদের একান্ত কিছু বিষয় নিয়ে এমন হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটিয়েছে বলে জানান তিনি।
এর আগে রোববার (২৫ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টার দিকে সােবহানীঘাট পুলিশ ফাঁড়ির খবরের ভিত্তিতে সিলেট মহানগরীর সােবহানীঘাটস্থ বনফুল এন্ড কোম্পানির দোকানের ২য় তলায় উঠার সিঁড়ির সামনে (নিচ তলায়) থেকে তুষারের মৃতদেহ উদ্ধার করে কোতোয়ালি থানা পুলিশ। মরদেহের গলায় ফাঁসের চিহ্ন ছিল বলে জানায় পুলিশ।
খবর পেয়ে তুষারের মা নাছিমা বেগম ঘটনাস্থলে গিয়ে ছেলের লাশ শনাক্ত করেন। পরে ময়না তদন্ত শেষে রোববার বিকালে নগরীর মানিকপীর টিলায় তুষারের লাশ দাফন করা হয়।
নিহতের বড় ভাই হিমেল আহমদ রাফি জানান, ‘তুষার হিজড়া নয়। কিন্তু সে হিজড়াদের সঙ্গে চলাফেরা করতো। শুক্রবার (২৪ সেপ্টেম্বর) রাতে তার ভাইকে কয়েকজন হিজড়া ঘর থেকে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর ভোরে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।’
সেদিন সিলেট কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলী মাহমুদ জানান, নিহত তুষার নারীর ছদ্মবেশে হিজড়ার রূপ ধরে থাকতেন। তিনি হিজড়াদের সঙ্গে চলাফেরাও করতেন।