নবীগঞ্জে ছাত্রলীগের দুই কমিটি নিয়ে উত্তেজনা

হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলা ও পৌর ছাত্রলীগের কমিটি জেলা থেকে অনুমোদন দেওয়ার পরই কেন্দ্রীয় কমিটি জেলা কমিটির অনুমোদন অবৈধ বলে ঘোষণা দিয়ে নতুন কমিটি ঘোষণা দিয়েছে। এ নিয়ে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে ব্যাপক উত্তেজনা বিরাজ করছে।

দীর্ঘ অর্ধযুগ পর কমিটি পেল নবীগঞ্জ উপজেলা ও পৌর ছাত্রলীগ। গত সোমবার (৫ ডিসেম্বর) ছাত্রলীগ হবিগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি মো. মোশারফ হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক ফয়জুর রহমান রবিন স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

নাজিম উদ্দৌলা চৌধুরীকে আহ্বায়ক ও তিনজন যুগ্ম-আহ্বায়ক দিয়ে ছাত্রলীগের উপজেলা আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে। আর সুব্রত চক্রবর্তীকে সভাপতি, মো. হাসান মিয়া তালুকদারকে সাধারণ সম্পাদক ও তোফাজ্জল ইসলাম তালুকদারকে সাংগঠনিক সম্পাদক করে নবীগঞ্জ পৌর ছাত্রলীগের ১ বছরের কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে।

নবীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি জেলা থেকে অনুমোদন দেওয়ার পরই কেন্দ্রীয় কমিটি জেলা কমিটির অনুমোদন অবৈধ বলে ঘোষণা দিয়ে উপজেলা ও পৌর ছাত্রলীগের নতুন কমিটি ঘোষণা দেয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেখা যায়, জাহিদুল ইসলাম রুবেলকে আহ্বায়ক, পাঁচজনকে যুগ্ম-আহ্বায়ক ও দুইজনকে সদস্য দিয়ে এক বছরের নবীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন দিয়েছেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি আল-নাহিয়ান খাঁন জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য।

অপরদিকে সাজু আহমেদ হৃদয়কে সভাপতি ও মহিউদ্দিন দয়ালকে সাধারণ সম্পাদক দিয়ে নবীগঞ্জ পৌর ছাত্রলীগের কমিটি অনুমোদন দিয়েছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খাঁন জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য।

সংগঠন সূত্রে জানা যায়, নবীগঞ্জ উপজেলা ও পৌর ছাত্রলীগের কমিটি গঠন করা হয় ২০১৮ সালের মে মাসে। কমিটির অনুমোদন দিয়েছিলেন তৎকালীন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। এরপর প্রায় ৬ বছর পর ছাত্রলীগের কমিটি অনুমোদন দেয় হবিগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগ।

এর কিছুক্ষণ পর দেখা যায়, আরেকটি প্যাডে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের স্বাক্ষরিত প্যাডে নবীগঞ্জ উপজেলা ও পৌর ছাত্রলীগের কমিটি অনুমোদন দেয়া হয়।

নাজিম উদ্দৌলা চৌধুরী বলেন, ছাত্রলীগ হবিগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি মো. মোশারফ হোসেন ভাই ও সাধারণ সম্পাদক ফয়জুর রহমান রবিন ভাই স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। আমাদের নবীগঞ্জের জাহিদুল ইসলাম রুবেলও পদপ্রার্থী ছিলেন। তিনি কমিটি না পাওয়ার ভুয়া একটি প্যাড রেডি করে বলছেন কেন্দ্র থেকে কমিটি এনেছেন। এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই আমরা উপজেলা ছাত্রলীগ। এছাড়া ফেসবুকের মাধ্যমেও প্রতিবাদ জানিয়েছি। নবীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী অঙ্গ সংগঠনকে অবগত করেছি এবং জেলা কমিটি থেকে বলা হয়েছে মাঠে কোনো প্রতিবাদ না জানাতে। তাই আমরা আমাদের সাংগঠনিক কার্যক্রম এগিয়ে নিচ্ছি।

জাহিদুল ইসলাম রুবেলের কাছে ছাত্রলীগের কমিটি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি পরে কল দেবেন বলে কল কেটে দেন।

হবিগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. মোশারফ হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক ফয়জুর রহমান রবিনের সাথে বারবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তারা কল রিসিভ করেননি।

তবে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে পোস্ট করে বলা হয়েছে, হবিগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত নবীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগ, পৌর ছাত্রলীগ ও কলেজ ছাত্রলীগের কমিটি গঠনতান্ত্রিক নিয়মে বৈধ এবং তা মাতৃসংগঠনের সহায়ক শক্তি হিসেবে অংশগ্রহণ করবে। ইতোমধ্যে আমরা লক্ষ্য করেছি, কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের স্বাক্ষর জাল করা হয়েছে। কত বড় দুঃসাহস! যারা এ কাজে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে সংগঠনের পক্ষ থেকে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। তখন দায় এড়িয়ে যাওয়ার কোনো সুযোগ কারও থাকবে না। সুতরাং, আজই নোংরামি বন্ধ করার নির্দেশ প্রদান করছি।