মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় এক ‘রাজাকারের’ নাম থাকা নিয়ে ফুঁসে উঠেছেন সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার সর্বস্তরের বীর মুক্তিযোদ্ধারা। অবিলম্বে মুক্তিযোদ্ধার তালিকা থেকে ‘রাজাকার’ আলাউদ্দিনের নাম এবং তার সকল সনদপত্র বাতিল করা না হলে উপজেলার সকল মুক্তিযোদ্ধারা মৃত্যুর পর রাষ্ট্রীয় সম্মান বয়কট এবং আন্দোলনের ডাক দেওয়ার ঘোষণা দেন।
রোববার (২১ আগস্ট) দুপুরে ‘উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম’র ব্যানারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ ও পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রীর নিকট স্মারকলিপি প্রদান করেছেন বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ।
প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা বলেন, ১৯৭১ সালে আলাউদ্দিন প্রকাশ্যে দেশবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন। পাকিস্তানিদের পক্ষে তিনি এলাকায় লুটতরাজ, অগ্নিসংযোগ, নারকীয় হত্যাকাণ্ডসহ নানা অপকর্মে লিপ্ত থাকেন। অথচ দেশ স্বাধীন হওয়ার পর তিনি কিভাবে মুক্তিযুদ্ধের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হন তা আমাদের বোধগম্য নয়।
উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ও সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ ইদ্রিস আলী বীরপ্রতীক বলেন, গত তিন মাস যাবৎ একজন স্বীকৃত বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রবীর চন্দ্র সরকারের সম্মানি ভাতা বন্ধ রয়েছে। অথচ একাত্তরে আলাউদ্দিন প্রকাশ্যে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতা এবং ওই বীর মুক্তিযোদ্ধার পিতা দেশপ্রেমিক গোপাল চন্দ্র সরকারকে নির্মমভাবে হত্যা করেন। রাজাকার মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পায় কিভাবে এটা আমরা মেনে নিতে পারছি না। তিনি ২০০৫ সালে বিশেষ তদারকির মাধ্যমে সেনা মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গেজেটে তার নাম অন্তর্ভুক্ত করেন। সে সময় আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ করেছিলাম। কিন্তু অদৃশ্যভাবে তিনি এখন রাষ্ট্রীয় সম্মানি ভাতাও পাচ্ছে। অবিলম্বে রাজাকার আলাউদ্দিনের সকল সনদপত্র বাতিল এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রবীর চন্দ্র সরকারের সম্মানি ভাতা চালু করা না হলে আমরা আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবো।
উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমাণ্ডার মো. সফর আলী বলেন, আলাউদ্দিন একজন কুখ্যাত রাজাকার। তার নাম মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় থাকবে এটা আমরা মেনে নিতে পারছি না। দোয়ারাবাজারে এখনও সাড়ে তিনশ মুক্তিযোদ্ধারা জীবিত আছি। এটা কোনোভাবেই হতে দেওয়া যায় না। অবিলম্বে মুক্তিযোদ্ধার তালিকা থেকে রাজাকার আলাউদ্দিনের নাম এবং তার সকল সনদপত্র বাতিল করা না হলে আমরা মুক্তিযোদ্ধারা আমাদের রাষ্ট্রীয় সম্মান বয়কট করবো।
প্রতিবাদ সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা তাজুল ইসলাম, উমর আলী মাস্টার, নুরুল ইসলাম, জহুর আলী, খোরশেদ আলম, ওয়ারিছ আলী, নসুমিয়া, মফিজ উদ্দিন, আবদুল মালেক, আবদুল খালেক, আবদুস সামাদ, সমাছুদ্দিন, লাল মিয়া প্রমুখ।