সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে আবুল মিয়া (৫৫) নামের এক গরু ব্যবসায়িকে প্রতিপক্ষ কর্তৃক মারধর ও বিষপানে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এঘটনায় প্রতিপক্ষের তিনজনকে আটক করেছে দোয়ারাবাজার থানার পুলিশ। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের গিরিশনগর গ্রামে।
নিহতের পরিবারের লোকজন ও তার মৃত্যুর পূর্বে দেওয়া এক ভিডিও বক্তব্যের সূত্রে জানা যায়, আবুল মিয়া ৫ সন্তানের জনক। তিন মেয়ে ও দুই শিশুপুত্র ছাড়া তার পরিবারে আর কেউ নেই। স্ত্রী অনেক আগেই মারা গেছেন। গিরিশনগর গ্রামের মৃত আশ্রব আলীর পুত্র মতি মিয়া ও সফিকুল মিয়ার সঙ্গে আবুল মিয়ার জমিজমা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। এরই জেরে গত শনিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) দুই পক্ষের মধ্যে বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে প্রতিপক্ষের লোকজন আবুল মিয়াকে মারধর করে এবং তাকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। ওই দিন রাতে স্থানীয় টেংরা বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে রাস্তায় ওৎ পেতে থাকা প্রতিপক্ষের লোকজন তাকে আবারও ধরে নিয়ে যায়। পরে বাড়ির পূর্বদিকের ছন ক্ষেতে নিয়ে তাকে হাতপা বেঁধে মারধর করে এবং জোরপূর্বক তার মুখে বিষ ঢেলে দেয়। গভীর রাতে হাওরে লোকজনের আনাগোনা দেখে হাত, পা ও মুখ বাঁধা অবস্থায় প্রতিপক্ষের লোকজন তাকে সেখানেই ফেলে আসে।
পরে রাত প্রায় সাড়ে তিনটার দিকে আবুল মিয়া হাত পায়ের বাঁধন খুলে গুরুতর আহত অবস্থায় বাড়িতে এসে চিৎকার শুরু করলে পরিবারের লোকজন তাকে তাৎক্ষনিক দোয়ারাবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠান। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ওই রাতেই আবুল মিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। সেখানে তিনদিন চিকিৎসাধীন থাকাবস্থায় বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
এঘটনায় নিহতের পরিবারে চলছে শোকের মাতম। অন্যদিকে আবুল মিয়ার মৃত্যুর খবর শোনে প্রতিপক্ষের মতি মিয়া ও শফিকুল মিয়ার পরিবারের লোকজন পালাতে গিয়ে পুলিশের হাতে দুই মহিলাসহ তিনজন আটক হন। বাকিরা পলাতক রয়েছে।
এব্যাপারে জানতে চাইলে দোয়ারাবাজার থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ বদরুল হাসান বলেন, ‘ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশের হেফাজতে আনা হয়েছে। এখনো লাশ এলাকায় আসেনি, বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’