অবশেষে জার্মানির ওয়েস্ট ফালেন অঙ্গরাজ্যের কোলন শহরে নির্মিত কেন্দ্রীয় মসজিদে দেয়া হলো মাইকে আজান। শুক্রবার জুমার নামজের দিন মাইকে আজান দেন ২৯ বছর মসজিদের ইমাম মুস্তাফা কাদের। এসময় নামাজ আদায় করতে আসা মুসল্লী ও স্থানীয়রা।
শহরের মেয়র হেনরিয়েটে রেকার এই মসজিদটিতে সংস্কৃতির পাইলট প্রকল্পের আওয়তায় আসছে দুবছরের জন্য শর্ত সাপেক্ষে প্রতি শুক্রবার দুপুর ১২টা থেকে ৩টার মধ্যেই মাত্র ৫মিনিট আজানের অনুমতি দেন। তবে শব্দের মাত্রা যাতে ৬০ ডেসিবেলের উপরে না যায় সেবিষয়েও খেয়াল রাখার কথা শর্তে উল্লেখ করা হয়।
এসময় নগরটির মেয়র রেকার দেশটির গণমাধ্যমে বলেন মসজিদের মাইকে আজান প্রচারের মাধ্যমে এদেশে বসবাসরত অভিবাসী মুসলিম সম্প্রদায়ের ও স্থানীয়দের মধ্যে সম্প্রীতির বন্ধন তৈরি হবে।
এদিকে, নগর প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্তে খুশি অঞ্চলটিতে বসবাসরত সাধারণ ধর্মপ্রাণ মুসলিমরাও। তবে হঠাৎ করেই এমন একটি কঠিন সিদ্ধান্তে দেশটির সাধারণ নাগরিকসহ রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে অনাস্থাও রয়েছে। বিশেষ করে রক্ষণশীল ও উগ্র চরমপন্থী রাজনৈতিক দলগুলো মসজিদে আজান দেয়ার এই মডেল প্রকল্পকে দেশের মূল্যবোধ ও সংস্কৃতি বিরোধী আখ্যা দিয়েছে। তাছাড়া অন্যান রাজনৈতিক দলগুলো জানিয়েছে, এ সিদ্ধান্তের ফলে জার্মানিতে মুসলিমরা ভবিষ্যতে শক্তি প্রদর্শনের চেষ্টা করবে। যা সমাজের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করতে পারে।
এর আগে জার্মানির পশ্চিমের একটি শহরে আজান দেওয়া নিষিদ্ধ করেছিল একটি আদালত। তবে গতবছরের সেপ্টেম্বরে তুরস্কের মুসলিম অভিবাসীদের ধর্মীয় সংগঠন দিতিব দেশটির উচ্চ আদালতে আপিল করলে উচ্চ আদালত নিম্ম আদালতের দেয়া বতিল করেন।
ওই সময় আদালত জানান, মসজিদে আজান ধর্মীয় অধিকার। রাষ্ট্র সেখানে হস্তক্ষেপ করতে পারে না এবং এ অধিকার অন্য ধর্মের অধিকারেও হস্তক্ষেপ করে না। ২০১৮ সাল থেকে সেখানে আজান নিষিদ্ধ হয়েছিল। জার্মানির ওই আদালত জানিয়ে দিয়েছে, সপ্তাহে একদিন যেভাবে সেখানে আজান দেওয়া হতো, তা আগের মতোই করা যাবে। শুধু তাই নয়, আগে ওই মসজিদে সপ্তাহে একদিন ২ মিনিট ধরে আজান দেয়া হতো।
গেল ২০১৮ সালে প্রতিষ্ঠিত কোলন কেন্দ্রীয় মসজিদটির উদ্বোধন করতে আসেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যাপ এরদোয়ান। অপূর্ব সৌন্দয্যের কারুকাজ করা এটিই জার্মানির বৃহত্তম মসজিদ।