দি সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি তাহমিন আহমদ বলেছেন, সরকার বর্তমান অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটকে প্রাধান্য দিয়ে ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের জন্য একটি সময়োপযোগী ও জনবান্ধব বাজেট জাতীয় সংসদে পেশ করেছে। এজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী এমপি ও বাজেটের সাথে সংশ্লিষ্ট সকলকে দি সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির পক্ষ থেকে অভিনন্দন।
বৃহস্পতিবার (৬ জুন) গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বাজেট প্রতিক্রিয়ায় এসব কথা বলেন চেম্বার সভাপতি।
তিনি বলেন, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট হচ্ছে বর্তমান অর্থমন্ত্রী ও সরকারের চলমান মেয়াদের প্রথম বাজেট, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ আকারের বাজেট। ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটের প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে ‘টেকসই উন্নয়নের পরিক্রমায় স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্নযাত্রা’। বাজেটের আকার ধরা হয়েছে মোট ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা, যা গত বছরের চেয়ে ৩৬ হাজার কোটি টাকা বেশী।
এবারের বাজেটে শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতে ১৩.৯%, ভর্তুকি ও প্রণোদনা খাতে ১১.১%, পরিবহন ও যোগাযোগ খাতে ১০.২%, স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন খাতে ৬% এবং সামাজিক নিরাপত্তা ও কল্যাণ খাতে ৪.৮% খাতে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আগামী বাজেটে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আকার ধরা হয়েছে ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা ব্যাংক ভর্তুকি ব্যয় ধরা হয়েছে ৮৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা।
বিজ্ঞপ্তিতে চেম্বার সভাপতি উল্লেখ করেন, আসন্ন বাজেটে খাদ্যমূল্য কমাতে খাদ্যপণ্যের উৎসে কর হ্রাস করা হয়েছে। শুল্ক ২% হতে ১% করা হয়েছে যা জনসাধারণের জন্য ভালো এবং সরকারের জন্য ইতিবাচক দিক। যার ফলে চাল, গম, আলো, পেঁয়াজ, রসুন, লবণ সহ প্রায় ২৭টি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য কমাতে সহায়ক ভ‚মিকা পালন করবে। এছাড়াও রাজস্ব আহরণের টার্গেট পূরণে রাজস্বের আওতা বৃদ্ধি করা হয়েছে, যার ফলে নিয়মিত কর প্রদানকারীদের চাপ কিছুটা কমবে বলে আমরা আশাবাদী।
তিনি আরও বলেন, আগামী বাজেটে শিক্ষা ও সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি করা হয়েছে। মাধ্যমিক শিক্ষা খাতে ৪৮ হাজার ১০৮ কোটি টাকা এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা খাতে ১১ হাজার ৭৮৩ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের ঝড়ে পড়া রোধে উপবৃত্তি এবং বয়স্কদের কল্যাণে বয়স্ক ভাতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। যার ফলে শিক্ষা ও মানব সম্পদ উন্নয়ন সূচকে দেশের অগ্রগতি হবে। সবার জন্য খাদ্য নিশ্চিতকরণ, উৎপাদন বৃদ্ধি ও কৃষি খাতের উন্নয়নে আগামী বাজেটে কৃষি যান্ত্রিকীকরণের উপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। এছাড়াও কৃষকদের সার ও কীটনাশক সরবরাহে ভর্তুকির পরিমাণ বৃদ্ধি করা হয়েছে, এতে দেশের কৃষি খাতের অভ‚তপূর্ব উৎপাদন সাধিত হবে।
তাহমিন আহমদ বলেন, পর্যটনের মাধ্যমে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রাখার লক্ষ্যে ২৫ বছর মেয়াদী পর্যটন মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। মহাপরিকল্পনাটি বাংলাদেশের পর্যটন খাতকে পুনরুজ্জীবিত করার একটি বিস্তৃত রোডম্যাপ হিসেবে কাজ করবে। এটি বাস্তবায়িত হলে ২০৪১ সাল নাগাদ জাতীয অর্থনীতিতে পর্যটন খাতের অবদান হবে ৪৭৭ কোটি মার্কিন ডলার। টেকসই ট্যুরিজম শিল্প বিকাশের লক্ষ্যে ট্যুরিজমের সাথে জড়িত সকল ট্যুর অপারেটর ও ট্যুর গাইডদের নিবন্ধনের পাশাপাশি উন্নত প্রশিক্ষণ প্রদানের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
সরকারের ইতিবাচক দিক হলো এবারের বাজেটের আকার ছোট কিন্তু জনকল্যাণমূখী। এবারের বাজেট গতবারের বাজেট থেকে ৪% বেশি, যার ফলে মুদ্রাস্ফীতি কমবে এবং প্রবৃদ্ধি বাড়বে। এর ফলে দেশের অর্থনৈতিক ভারসাম্য ঠিক থাকবে বলেও জানান তিনি।
তিনি অর্থমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ২৭টি পণ্য উৎস কর কমায় বাজারে স্বস্তি ফিরবে। উপকার পাবে দেশের নিম্ন আয়ের মানুষ, যারা সরকারের উপর নির্ভরশীল। এছাড়াও বিশেষায়িত হাসপাতালে জনগণের স্বাস্থ্য সেবার কথা বিবেচনা করে অতিরিক্ত কর কমানোর জন্য চেম্বার নেতৃবৃন্দ দাবি জানান।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটটি বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত সময়োপযোগী ও জনবান্ধব। সঠিকভাবে বাস্তবায়িত হলে এই বাজেট দেশ ও জনগণের জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে বলে মনে করেন সিলেট চেম্বার নেতৃবৃন্দ।