জগন্নাথপুরে বন্যার শঙ্কা, বিপৎসীমার ওপরে বইছে কুশিয়ারা

একদিন পর ঈদুল আজহা। এই ঈদের খুশির সঙ্গে সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে দুয়ারে কড়া নাড়ছে বন্যার দুঃখ। গত বৃহস্পতিবার ভোর থেকে শুরু হওয়া ভারি বৃষ্টি ও ভারতের চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টিপাত চলমান থাকায় জগন্নাথপুর নদ-নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে।

গত শুক্রবার দিনে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কিছুটা কমলেও সন্ধ্যার পর থেকে আবারও শুরু হয় বৃষ্টি। শুক্রবার রাত থেকে আজ শনিবার (১৫ জুন) বেলা ১২টা পর্যন্ত টানা বৃষ্টির কারণে নদ নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।

সিলেট আবহাওয়া অফিসের তথ্য মতে, সিলেটে গত ২৪ ঘণ্টায় (শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে শনিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত) বৃষ্টিপাত হয়েছে ৬২ মিলিমিটার। শনিবার (১৫ জুন) সকাল ৬টা থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত সিলেটে বৃষ্টিপাত হয়েছে ৪৫ মিলিমিটার। সকাল ৯টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত বৃষ্টিপাত হয়েছে ১১ মিলিমিটার।

অপরদিকে আগামী পাঁচদিন সিলেট অঞ্চলে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

বন্যার শঙ্কার কথা জানিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় ভারতের চেরাপুঞ্জিতে ৫১৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেখে যেটা মনে হচ্ছে আগামী তিন চারদিন এরকম বা এর কাছাকাছি বৃষ্টিপাত হবে। তাই বলা যায় আমরা বন্যার ঝুঁকির মধ্যে আছি। আমাদের পানি উন্নয়ন বোর্ডে কর্মরতদের ঈদের ছুটি নেই। আমি নিজেও কর্মস্থলে আছি। তাই এই ঈদে সবাইকে বন্যা মোকাবেলায় প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে হবে।

জগন্নাথপুর উপজেলার চান মিয়া বলেন, ‘আমাদের বাড়ি ঘরে পানি, এবার ঈদ করতে পারবো না, বাড়ি থেকে বের হতে হলে, পানি ভেঙ্গে বেরোতে হয়।’

জগন্নাথপুর পৌর এলাকার বেজ সুমা বেগম বলেন, ‘আমরা পানির উপরে বসবাস করছি, ঈদ তো করবো দূরের কথা, ঈদ আসলে আমাদের কেউ খবর নেয় না, মাংস ও পানি। এবার তো আমরা পানির উপর আছি।’

জগন্নাথপুর পৌর এলাকার সুমন মিয়া বলেন, ‘বাড়ি গড়ে পানি তাকায়, রুজি রোজগার করতে পারিনি, ঈদ করবো কেমন করে পরিবার নিয়ে, এবার ঈদ করতে পারবো না।’

জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আল বশিরুল ইসলাম বলেন, ‘বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য, ঈদে ছুটি নেই,, বন্যা মোকাবিলার জন্য আমরা সকল প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি।’