জগন্নাথপুরে জমি দখল, ইউএনওর বিরুদ্ধে মামলা

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাজেদুল ইসলাম

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে খাস জমি দখলে সহায়তা করার অভিযোগে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাজেদুল ইসলাম ও সাবেক ইউএনওসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন মুহিতুর রহমান তালুকদার নামের এক আইনজীবী।

সোমবার (২০ মার্চ) ওই আইনজীবী সুনামগঞ্জের সিনিয়র স্পেশাল জজ ও দায়রা জজ আদালতে এই মামলা করেন।

আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে সিলেট দুনীতি দমন কমিশনকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দিয়েছেন। এদিকে খাস জমি দখলের বিষয়টি জানা নেই বলে দাবি করেছেন ইউএনও সাজেদুল।

মামলায় ছয়জন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ ১৩ জনকে আসামি করা হয়েছে। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা হলেন- জগন্নাথপুরের ইউএনও সাজেদুল ইসলাম, সাবেক ইউএনও মাহফুজুল আলম মাসুম, সাবেক সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইয়াসির আরাফাত, সাবেক সার্ভেয়ার আব্দুল মোনায়েম খাঁন, বর্তমান সার্ভেয়ার মুহিবুর রহমান ও সদর ইউনিয়ন ভূমি উপসহকারী কর্মকর্তা একে এম নাজমুল হুদা খাঁন।

মামলা থেকে জানা গেছে, জগন্নাথপুর পৌর এলাকার হবিবপুর মৌজার ১ নম্বর খতিয়ানের ১২৫ নম্বর দাগের ২২ শতক পতিত জমি ২০১৪ সালে দখল করেন স্থানীয় বাসিন্দা আলী আকবর, আলকাব আলী, সিজিল মিয়া, রুহিন মিয়া, সুজাত মিয়া, আবু শায়েক ও জামাল মিয়া। ছয় বছর পর এলাকাবাসীর দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ওই জমি উচ্ছেদের জন্য ২০২০ সালের ৮ সেপ্টেম্বর সুনামগঞ্জের রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর (আরডিসি) দখলকারীদের সাত দিনের মধ্যে উচ্ছেদের জন্য নির্দেশ দেন।

এদিকে ওই জমি দখলমুক্ত না হওয়ায় ভুক্তভোগীদের পক্ষে ওই এলাকার বাসিন্দা আইনজীবী মুহিতুর রহমান তালুকদার ২০২১ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কাছে ওই জমি দখলমুক্ত করার জন্য লিখিত আবেদন করেন।

মামলার বাদী মুহিতুর জানান, জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করা হলে তিনি জেলার রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টরকে (আরডিসি) ব্যবস্থা নেওয়ার দায়িত্ব দেন। পরে আরডিসি ২০২১ সালের ২৪ অক্টোবর ইউএনও সাজেদুলকে অবৈধ দখলকারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশ দেন। পরে ইউএনর সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি সার্ভেয়ার মুহিবুর রহমানের পরামর্শ অনুযায়ী কাজ করতে বলেন। এ সময় সার্ভেয়ার মুহিবুর দুই লাখ টাকা উৎকোচ দাবি করেন। এর প্রতিবাদ করলে ওই সার্ভেয়ার পুলিশের ভয়ভীতি দেখান। একইভাবে অভিযোগ ওঠা সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে সরকারি আদেশ অমান্য করে ঘুষ দাবি করার কথা মামলায় উল্লেখ করেন তিনি।

এ বিষয়ে ইউএনও সাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। আমি এ উপজেলার আসার পর ওই এলাকায় এমন কিছু হয়নি। জানি না, ওই কর্মকর্তাদের সময়ে এই ঘটনা ঘটতে পারে। জানি না আমার নাম কেন দিয়েছেন। হয়তো পদাধিকার বলে আমার নাম দেওয়া হয়েছে।’

মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী আবুল আজাদ বলেন, ‘আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে সিলেট দুর্নীতি দমন কমিশনকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে আদেশ দিয়েছেন।’