সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার রানীনগর গ্রামে কুশিয়ারা নদীর ভাঙনে দিশেহারা হয়ে পড়েছে তীরে বসবাস করা বেশ কয়েকটি পরিবার। শুধু তাই নয়, সম্প্রতি স্মরণকালের বন্যার পর এই গ্রামে নদী ভাঙনে অন্তত ৬০টি বসতভিটা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, গত ৪ সপ্তাহ ধরে রানীনগর গ্রামে প্রবল নদীভাঙন শুরু হয়। এখন পর্যন্ত তা অব্যাহত রয়েছে। ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িগুলোর টিন, কাঠসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র স্তুপ করে রাখা হয়েছে রাস্তার ওপর। যাদের কিছুটা সামর্থ্য আছে তারা ওই সড়কের ওপরেই নতুন করে কোনমতে ঘর তুলে মাথা গোঁজার ঠাঁই করে নিয়েছেন।
প্রায় ৩০ বছর পূর্বে রানীনগর গ্রাম সৃষ্টি হয়েছিল। দিরাই উপজেলার সুরিয়ারপাড় গ্রাম জগন্নাথপুর উপজেলার চিলাউড়া-হলদিপুর ইউনিয়নের বাউধরন, স্বজনশ্রী, রানীগঞ্জ ইউনিয়নের রানীগঞ্জ বাজার, বাগময়না গ্রাম থেকে লোকজন এসে এ গ্রামে বসবাস করে আসছে। শেষ পর্যন্ত এই গ্রামে মাথা রাখার স্থান চোখের সামনে ভেঙ্গে যাচ্ছে দেখে দিশেহারা হয়ে যাচ্ছেন বসবাসরত মানুষেরা।
এ পর্যন্ত তেরা মিয়া, নুরুল আমিন, সাইদুল আমিন অভিনাস দাশ, দেবেন্দ্র দাস, জামাল মিয়া, সমসুল হক, ফখরুল মিয়া, দিপালী দাশ, নিপেন্দ্র দাশ, সশিন্দ্র দাশ, মনিন্দ্র দাশ, সিতাব আলী, নুর মিয়া, কাচা মিয়া, কালা মিয়া, আছাব মিয়া, আবুল হোসেন, নুরুল হক সঈদুল আমিনসহ আরো অনেকেরই বাড়ী ভেঙ্গে গেছে।
গ্রামের বেশিরভাগ মানুষ শ্রমিক শ্রেণির, দিন আনে দিন খায়। এছাড়াও অনেকেই কৃষি কাজ, ভাঙারি ব্যবসা এবং মুদি দোকান দিয়েই জীবিকা নির্বাহ করেন। ফলে এখানকার বাসিন্দাদের দিন-রাত কাটছে আতঙ্কে।
স্থানীয়রা জানায়, দিন রাত যে কোন সময় কুশিয়ারা পাড় ভেঙ্গে ভয়ঙ্কর বেগে ঘরের দিকে আসছে। চিৎকার করে আশপাশের লোকদের ডেকে তুলে ঘর ভেঙে সরাতে শুরু করেন। এরই মধ্যে কয়েকটি ঘর নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। বসত ভিটা, গাছপালা, ফসলি জমিও নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শেখ ছদরুল ইসলাম জানান, ‘রানীনগর গ্রামের নদী ভাঙ্গনের স্থান পরিদর্শন করে আসছি। এ বিষয়টি আমি পরিকল্পনামন্ত্রী মহোদয়কে অবগত করেছি। মন্ত্রী মহোদয় আগামীতে ব্রিজ পরিদর্শন করতে আসলে নদীভাঙন স্থানে নিয়ে যাওয়া হবে। আশা করি ভাঙন এলাকার লোকজনের জন্য কিছু করতে পারবো।’
জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাজিদুল ইসলাম বলেন- ‘নদী ভাঙনের কথা শুনেছি। আমরা তাদের জন্য চিন্তা করছি, কিছু করার জন্য।’