হাওর অধ্যুষিত সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার প্রায় ২২ হাজার হেক্টর জমিতে প্রতিবছর বোরোধান চাষাবাদ করা হয়। সনাতন পদ্ধতিতে চাষাবাদ করে থাকেন হাওর এলাকার কৃষক। গত বোরোধান চাষাবাদের মৌসুমে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহযোগিতায় যুক্ত হয় আধুনিক পদ্ধতি। শুরু হয় ট্রে’তে চারা রোপন ও ধান লাগনোর জন্য রাইস ট্রান্সপ্লান্টার নামের প্রযুক্তির যন্ত্র ব্যবহার।
আধুনিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ করে ফলন ভালো হওয়ায় উদ্বুদ্ধ হয়ে এবার অগ্রহায়ণের ফসল আমন ধান চাষাবাদে উপজেলার হলদিপুর-চিলাউড়া ইউনিয়নের কৃষকরা ট্রে’তে চারা রোপন করে আধুনিক পদ্ধতির রাইস ট্রান্সপ্লান্টার মেশিনের মাধ্যমে ধান লাগাতে দেখা গেছে।
খাগাউড়া গ্রামের কৃষক বাবুল মিয়া বলেন, গত বোরোধান চাষাবাদে আমরা কৃষি অফিসের পরামর্শে ট্রে’তে ধানের চারা রোপন করে রাইছ ট্রান্সপ্লান্টার মেশিনের মাধ্যমে ধান রোপণ করেছি এবং খরচ তুলনামূলক কম আর ফলনও ভালো হয়েছে। এবছরও আমরা আমনধান চাষাবাদে ট্রে’তে চারা ধান রোপন করে রাইস ট্রান্সপ্লান্টার মেশিনের মাধ্যমে রোপণ করেছি। আমাদের চাষাবাদ খরচ কম হয়েছে, ভালো ফলন হবে আশাবাদী।
জগন্নাথপুর উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সুমন চন্দ্র দাস বলেন, গত বোরোধান চাষাবাদ মৌসুমে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহযোগিতায় সরকারি অর্থায়নে বীজ বপনের জন্য ট্রে এবং চারা ধান রোপণের জন্য রাইস ট্রান্সপ্লান্টার মেশিন কৃষকদের প্রদান করা হয়। উপকৃত কৃষকরা উদ্বুদ্ধ হয়ে এবছর নিজ উদ্যোগে তারা প্রযুক্তির মাধ্যমে ধান চাষাবাদ করছেন।
তিনি আরও বলেন, আমরা মাঠপর্যায়ে গিয়ে সবধরনের পরামর্শ সহ বিভিন্ন ভাবে কৃষকদের সহযোগিতা করছি। প্রত্যাশা আগের চেয়ে ফলন আরও ভালো হবে।
জগন্নাথপুর উপজেলা কৃষি অফিসার কাওসার আহমেদ বলেন, প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে কৃষি ব্যয় কমিয়ে আনতে সরকার নানান উদ্যোগ নিয়েছেন, জগন্নাথপুর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের কৃষকদের আধুনিক পদ্ধতিতে ধান চাষাবাদের জন্য ট্রে’তে বীজ বপন ও রাইস ট্রান্সপ্লান্টার যন্ত্রের মাধ্যমে ধান রোপণ পদ্ধতি প্রশিক্ষন দেওয়া হয়েছে, এসকল প্রশিক্ষনপ্রাপ্ত কৃষকরা উদ্বুদ্ধ হয়ে এখন তারা নিজ উদ্যোগে আধুনিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ করে উপকৃত হচ্ছেন।
কাওসার আহমেদ বলেন, চলতি আমন ধান চাষাবাদ মৌসুমে উপজেলায় ৯ হাজার ৫ শত হেক্টর জমিতে চাষাবাদ করা হচ্ছে, ভাদ্র মাসের শেষ পর্যন্ত রোপনের সময় রয়েছে এতে চাষের জমির পরিমাণ আরও বাড়তে পারে। এবছর কৃষকরা উফশী জাতের ব্রি-ধান ১১, ব্রি-৮৭,ব্রি–৭৫ সহ বিভিন্ন উচ্চ ফলনশীল ধান চাষাবাদ করছেন। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে ২.৬০ মেট্রিটন চাউল লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। জগন্নাথপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-সহকারীগণ মাঠ পর্যায়ে গিয়ে কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে থাকেন। কৃষি অফিস কৃষকদের পাশে রয়েছে।