সিলেটের জকিগঞ্জে যৌতুকের দাবীতে স্ত্রীর চুর কেটে দিয়ে নিযার্তনের ঘটনায় আলোচিত সেই স্বামী আলকাছ উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
ঘটনার পর শুক্রবার (১২ মে) বিকাল ৪টায় মামলা দায়েরের চার ঘন্টার মধ্যে রাত ৮টার দিকে জকিগঞ্জ থানা পুলিশের একটি দল অভিযান চালিয়ে নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন, সিলেট জেলা পুলিশের মিডিয়া অফিসার ইন্সপেক্টর শ্যামল বণিক।
পুলিশ জানায়, গত ৬ মাস পূর্বে জকিগঞ্জ থানাধীন বারঠাকুরী ইউনিয়নের উত্তরবাগ গ্রামের জাকির হোসেনের ছেলে আলকাছ উদ্দিন (৩২) এর সাথে একই উপজেলার গঙ্গাজল গ্রামের মৃত মকদ্দছ আলীর মেয়ে রিমা আক্তার (২৭) এর বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই স্ত্রী রিমার কাছে যৌতুক দাবী করে আসছিল আলকাছ উদ্দিন। যৌতুকের টাকা না পেয়ে মাঝে মধ্যে রিমা আক্তারের উপর চালাতো শারীরিক ও মানসিক নিযার্তন। নিযার্তনের সহযোগীতা করতো আলকাছ উদ্দিনের বড় ভাই জয়নাল আবেদীন। এই নিয়ে রিমা আক্তার ও আলকাছ উদ্দিন এর দাম্পত্য কলহ লেগেই থাকতো।
গত বৃহস্পতিবার (১১ মে) রাত আনুমানিক ৯টার দিকে রিমার স্বামী আলকাছ যৌতুকের টাকা চাইলে সে অপারগতা প্রকাশ করে। তখন স্বামী আলকাছ তার স্ত্রীকে বাঁশের লাঠি দিয়ে মারপিট করে শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্তাক্ত জখম করে। রিমার কান্নাকাটি শোর-চিৎকার করলে তার স্বামীর বড় ভাই জয়নাল আবেদীন এসে কাঁচি নিয়ে এসে তার লম্বা চুল কেটে দেয়। এ অবস্থায় রিমা পালিয়ে পার্শ্ববর্তী পুকরা গ্রামের মো. জাকির হোসেনের বাড়ীতে গিয়ে আত্মরক্ষা করে। পরবর্তী জাকির হোসেন জরুরী সেবা ৯৯৯ কল দিয়ে ঘটনা জানালে জকিগঞ্জ থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে রিমাকে উদ্ধার করে। পরে রিমাকে তার মায়ের জিম্মায় দিয়ে চিকিৎসার জন্য দ্রুত জকিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স প্রেরণ করা হয়।
পরবর্তীতে রিমা আক্তার বাদী হয়ে জকিগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করলে তাৎক্ষণিক ওসি মোশাররফ হোসেন, জকিগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাকির হোসাইন বিষয়টি জেলার পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুনকে অবহিত করেন। তখন দ্রুত মামলা এফআইআর করে আসামিকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ প্রদান করেন পুলিশ সুপার।
নির্দেশনা পেয়ে জকিগঞ্জ থানা পুলিশের একাধিক টিম অভিযান পরিচালনা করে অমানবিক নিযার্তনের শিকার রিমা আক্তারের স্বামী অভিযুক্ত আলকাছ উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে।
অভিযুক্ত আসামিকে বিধি মোতাবেক বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা পুলিশের মিডিয়া অফিসার শ্যামল বণিক।