হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সাপেকাটা প্রতিরোধক ভ্যাক্সিন অ্যান্টিভেনম নেই। ফলে উপজেলায় কোনো সাপেকাটার ঘটনা ঘটলে তাৎক্ষনিক তাকে চিকিৎসার আনা সম্ভব হচ্ছে না। এমনকি ভ্যাক্সিন অ্যান্টিভেনমের অভাবে মৃত্যুও ঘটছে।
এমন বাস্তবতায় সম্প্রতি উপজেলার দুটি মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। তাদেরকে হাসপাতালে নেওয়ার পর ভ্যাক্সিনের অভাবে দুজনই মারা যান। যাদের একজন মারা যান গত ১৭ জুন ও অপরজন ২২ জুন মারা গেছেন।
জানা গেছে, উপজেলার কালিকাপুর গ্রামের কিশোর সালাহ উদ্দিন ও গোগাউড়া গ্রামের বাসিন্দা জালালাবাদ গ্যাসের অফিস সহকারী আব্দুল কাদির জিতু বৃষ্টির পানিতে নিজ গ্রামের দিঘি ও খালে মাছ শিকার করতে যান। এ সময় তাদেরকে বিষাক্ত সাপ ছোবল দেয়। তাদের মধ্যে কিশোর সালাহ উদ্দিনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও আব্দুল কাদিরকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে যথাযথ ভ্যাকসিনের না পাওয়ায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় তারা মারা যান।
বিষয়টি নিশ্চিত করে চুনারুঘাট উপজেলার থানা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মোজাম্মেল হোসেন জানান, চুনারুঘাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অ্যান্টিভেনম না থাকায় আব্দুল কাদিরের শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। তখন উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজনে তাকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।
একইভাবে সাপে কাটার পর সালাহউদ্দিনকে চুনারুঘাট হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে অ্যান্টিভেনম ইনজেকশন না পাওয়ায় তার মৃত্যু ঘটে বলে তার পরিবারের দাবি।
প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে চুনারুঘাট উপজেলায় সাপে কাটার শিকার বেশি হন গ্রামের মানুষ। গ্রামাঞ্চলে ভারী বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে নদী, খাল, পুকুরের পানি উপচে বাইরে প্রবাহিত হওয়ার সময় মাছ শিকারে গিয়ে তারা সাপের কবলে পড়ে। কুসংস্কারের কারণে সাপে কাটা রোগীদের চিকিৎসকের কাছে যান না অনেকেই। পাশাপাশি অনেক রোগী হাসপাতালে ভর্তি হলেও সময়মতো অ্যান্টিভেনম না পাওয়ার কারণে তারা অকালে মারা যান।
এ অবস্থায় চুনারুঘাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পর্যাপ্ত পরিমাণ অ্যান্টিভেনম সরবরাহ নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন উপজেলাবাসী।