সিলেটের গোলাপগঞ্জে পূর্বপুরুষের বিক্রয় করা জায়গার দখল না ছেড়ে উল্টো ক্রয়কারীর উত্তরসূরীদের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে। দখলবাজদের হামলায় এক যুবক গুরুতর আহত হয়ে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন। তিনি রয়েছেন জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। এ ঘটনায় গুরুতর আহত যুবকের পরিবার থানায় মামলা দায়ের করলেও আসামিদের ধরতে গড়িমসি করছে পুলিশ।
রোববার (২৫ ডিসেম্বর) বিকেলে সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এসব অভিযোগ করেন গোলাপগঞ্জ উপজেলার লক্ষিপাশা ইউনিয়নের জগঝাপ গ্রামের মৃত আহমদ আলীর ছেলে মাসুদ আহমদ।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, তার আত্মীয় ও প্রতিবেশী নাজিম উদ্দিন (৩৩), মঈন উদ্দিন (৩৫), ইব্রাহিম আলী (৪০), আবুল হোসেন (৪৮), রাফি আহমদ (২২), মাহি আহমদ (২০), সাফি আহমদ (২০) ও রোকিয়া বেগমের (৫৫) সঙ্গে ১৭ শতক জায়গা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে মাসুদের পরিবারের বিরোধ চলে আসছে। ওই জায়গা নাজিম উদ্দিনের দাদা মাসুদের দাদার কাছে বিক্রি করে দিয়েছিলেন। দলিলসহ এর সকল কাগজপত্রও তাদের কাছে রয়েছে। কিন্তু নাজিম উদ্দিনরা সেই জায়গার দখল না ছেড়ে এতদিন ধরে মাসুদের পরিবারকে হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছেন। এর প্রেক্ষিতে গত ১৩ ডিসেম্বর মাসুদের পরিবারের পক্ষ থেকে আদালতে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নেওয়া হয়।
বিষয়টি জানতে পেরে ওইদিন সকালে নাজিম উদ্দিন ও তার সহযোগীরা মাসুদের বড় ভাই মামুন আহমদকে বাড়ির পাশের সবজি ক্ষেতে একা পেয়ে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তার ওপর হামলা চালিয়ে বেধড়ক মারধর এবং এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকেন। এসময় মামুনের চিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যান। পরে মামুনকে গুরুতর আহত অবস্থায় ওসমানী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ভর্তির পর মামুনের মাথায় বড় ধরণের অস্ত্রোপচার করা হয়। তিনি গত ১৪ দিন ধরে ওসমানী হাসপাতালের আইসিইউ-তে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রয়েছেন।
মাসুদ আহমদ তার লিখিত বক্তব্যে পুলিশের বিরুদ্ধে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার না করার অভিযোগ করে বলেন, এ ঘটনার পর উপরোল্লিখিত ৮ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৪-৫ জনকে আসামি করে তাদের পরিবারের পক্ষ থেকে গোলাপগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করা হয়। কিন্তু মামলার পর একজন আসামিকেও ধরার চেষ্টা করেনি পুলিশ। এ সুযোগে ইতোমধ্যে নামোল্লেখকৃত ৮ আসামির ৫ জন আদালত থেকে জামিন নিয়ে নিয়েছেন। আর মূল তিন অভিযুক্ত জামিন না নিয়েও তারা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন এবং মাসুদের পরিবারকে মামলা তুলে নিতে বারবার চাপ দিচ্ছেন। মামলা তুলে না নিলে ফের হামলা, এমনটি প্রাণনাশের হুমকিও দিচ্ছেন আসামিরা। এ অবস্থায় জান-মালের নিরাপত্তায় পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্থক্ষেপ কামনা করেছেন মাসুদ আহমদ।