সোমবার বিকেল ৪টা ২০ মিনিটে উত্তরা জসীম উদ্দীন এলাকায় আড়ংয়ের সামনে ফ্লাইওভারের গার্ডার চাপায় এ দুর্ঘটনা ঘটলেও প্রাইভেটকার থেকে নিহতদের কোনোভাবেই বের করা যাচ্ছিল না। প্রায় তিনঘন্টা পর সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে মরদেহগুলো উদ্ধার করা হয়।
জানা গেছে, গার্ডারের নিচে প্রাইভেটকার চাপা পড়ে থাকায় মরদেহগুলো বের করা সম্ভব হচ্ছিল না। পরে এক্সকাভেটর দিয়ে গার্ডার সরিয়ে তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
ফায়ার সার্ভিসের ঢাকা জোন-৩ উপ সহকারী পরিচালক সাইফুজ্জামান বলেন, ১৫০ টন ওজনের গার্ডার হওয়ায় উদ্ধার কাজ শুরু করা যায়নি। পরে এক্সকাভেটর আনা হয়। এক্সকাভেটর আনতে দেরি হওয়ায় উদ্ধার কাজ বিলম্ব হয়। এক্সকাভেটর দিয়ে গার্ডার একটু উঁচু করে প্রাইভেকারের ভেতর থেকে পাঁচজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
জানা গেছে, প্রাইভেটকারে একই পরিবারের সাত সদস্য ছিলেন। নিহতরা হলেন- রুবেল (৬০), ফাহিমা (৪০), ঝরনা (২৮), ঝরনার দুই সন্তান জান্নাত (৬) ও জাকারিয়া (২)। ঘটনাস্থলেই তাদের মৃত্যু হয়েছে। শুধু বেঁচে গেছেন হৃদয় ও রিয়া মনি নামের নবদম্পতি। তাদের গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিআরটি প্রকল্পের জন্য নির্মিত গার্ডার একটি ক্রেন দিয়ে সরানো হচ্ছিল। এসময় গার্ডারটি হঠাৎ করে রাস্তায় চলমান প্রাইভেট কারের ওপর পড়ে যায়। গার্ডারটি ক্রেন থেকে ছুটে যায়নি, বরং ক্রেনের একপাশ উল্টে যায়।
ধারণা করা হচ্ছে ক্রেনটির ধারণক্ষমতা কম ছিল কিংবা চালক ভুলভাবে সেটি অপারেট করেছেন।
এদিকে দুর্ঘটনার পর উত্তরা এলাকায় যান চলাচল বন্ধ থাকায় তীব্র যানজট দেখা দিয়েছে। যানজট নিরসন এবং দুর্ঘটনাকবলিত প্রাইভেটকারটি সরিয়ে নিতে পুলিশ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
এর আগে গত ১৫ জুলাই গাজীপুরে এই বিআরটি প্রকল্পের ‘লঞ্চিং গার্ডার’ চাপায় এক নিরাপত্তারক্ষী নিহত হন। ওই দুর্ঘটনায় এক শ্রমিক ও একজন পথচারী আহত হয়েছিলেন।
দুর্ঘটনার পর প্রকল্প এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারে পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়ে বিভিন্ন মহলে আলোচনা হয়। তারপরও কার্যকর ব্যবস্থা না নেওয়ায় আজকের এ দুর্ঘটনা ঘটল।