চলমান দাবদাহে দিনাজপুরের লিচুর বাগানগুলোতে অবিরত ঝরে পড়ছে গুটি। বাগানগুলোর খুব কাছ থেকে গুটি পড়ার টিপটপ শব্দ শোনা যায় অবিরাম। ফলে এবার ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন লিচুচাষিরা।
গতকাল রোববার (২৮ এপ্রিল) সদর উপজেলার মাসিমপুরের বিভিন্ন লিচুর বাগানে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিটি বাগানে লিচুর গুটি ঝরে পড়ছে। লিচুর মঞ্জরিগুলো প্রায় ফাঁকা হয়ে গেছে। প্রতিটি মঞ্জরিতে ৬-৭টি লিচু অবশিষ্ট আছে। যেখানে একটি মঞ্জরিতে কমপক্ষে ২০টি লিচু থাকার কথা। এছাড়া মঞ্জরিগুলো শুকিয়ে তামাটে রং ধারণ করেছে।
মাসিমপুরের লিচুচাষি আকবর আলী জানান, এবার প্রচুর মুকুল এসেছিল। প্রতিটি মঞ্জরি মুকুলে পরিপূর্ণ ছিল। কিন্তু গুটি আসার সময় থেকে তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় গুটি পড়তে শুরু করে। এখন চার ভাগের একভাগ গুটি নেই।
সদর উপজেলার উলিপুর গ্রামের মোজাফফর এবার ছয়টি লিচু বাগান কিনেছেন। তিনি জানান, চোখের সামনে সব গুটি ঝরে যাচ্ছে। কোনো কুলকিনারা পাচ্ছি না। লাভের আশা ছেড়ে দিয়ে এখন আসলের দুশ্চিন্তায় আছেন তিনি।
একই উপজেলার মহব্বতপুর গ্রামের লিচুচাষি জাকির হোসেন জানান, তার বাগানে মাদ্রাজি, বোম্বাই, বেদানা জাতের লিচু গাছ রয়েছে। অব্যাহত তাপপ্রবাহ আর প্রখর রোদে লিচুর গুটি ঝরে পড়ছে। তিনি জানান, মাদ্রাজি ও বেদানা জাতের গাছের লিচুই বেশি ঝরে পড়ছে।
কৃষি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, লিচুর গুটি আসার সময় সাধারণত তাপমাত্রা ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে লিচুর ফলনের জন্য বেশ ভালো। কিন্তু দিনাজপুরে তাপমাত্রা প্রায় ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস বিরাজ করছে, যা লিচুর ফলনের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।
দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (উদ্যান) মোস্তাফিজুর রহমান জানান, লিচুর গুটি রক্ষায় বাগানে নিয়মিত সেচ ও গাছে ওষুধ প্রয়োগ করতে হবে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রমতে, দিনাজপুরে সাড়ে ৫ হাজার হেক্টর জমিতে লিচুর বাগান রয়েছে।