রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে ইউক্রেনে হামলার দিকে ‘ঠেলে’ দেওয়া হয়েছে। তবে তিনি কিয়েভ ‘ভদ্রলোকদের’ ক্ষমতায় বসাতে চেয়েছিলেন। শুক্রবার এমন মন্তব্য করেছেন ইতালির সাবেক প্রধানমন্ত্রী সিলভিও বেরলুসকোনি। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম রয়টার্স।
ইতালির আসন্ন পার্লামেন্ট নির্বাচনের ঠিক আগে এমন বিতর্কিত এমন মন্তব্য করলেন ৮৫ বছরের সিলভিও বেরলুসকোনি। দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন আরএআই-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, রাশিয়ার পরিকল্পনা ছিল মূলত ‘এক সপ্তাহের মধ্যে’ কিয়েভ জয় করা এবং ভলোদিমির জেলেনস্কির জায়গায় ‘ভদ্রলোকদের সরকার’ স্থলাভিষিক্ত করা। আরেক সপ্তাহের মধ্যে তারা দেশটি থেকে বেরিয়ে যেতো।
সিলভিও বেরলুসকোনি বলেন, রুশ সেনারা ইউক্রেনের চারপাশে কেন ছড়িয়ে পড়েছিল সেটি অনুধাবনে তিনি ব্যর্থ হয়েছেন। তার মতে, সেনাদের কেবল কিয়েভের চারপাশে অবস্থান করা উচিত ছিল।
রুশ প্রেসিডেন্টের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত এই ইতালীয় রাজনীতিক এক সময় ভ্লাদিমির পুতিনকে তার ছোট ভাইয়ের মতো বলে বর্ণনা করেছিলেন।
ইতালির আসন্ন নির্বাচনে একটি ডানপন্থী জোট ক্ষমতায় আসতে পারে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর অনুষ্টিতব্য এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর প্রথমবারের মতো দেশটিতে চরম দক্ষিণপন্থী কোনও নেতা ক্ষমতায় চলে আসতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে। ইতোমধ্যেই ইউরোপের আরেক দেশ সুইডেনের নির্বাচনেও ভালো ফল পেয়েছে দক্ষিণপন্থীরা। দেশটিতে একটি উগ্র ডানপন্থী ও নব্য নাৎসী দল ক্ষমতার খুব কাছাকাছি চলে এসেছে।
জনমত জরিপ বলছে, ইতালিতে দক্ষিণপন্থি জোট বেশ ভালোভাবেই এগিয়ে রয়েছে। এই জোটে তিনটি দল রয়েছে। দলগুলো হলো জর্জা মেলোনির ব্রাদার্স অব ইটালি, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জাতীয়তাবাদী রাজনীতিক মাত্তেও সালভিনির নর্দার্ন লিগ এবং সিলভিও বারলুসকোনির ফোরজা ইতালিয়া। দেশটির এবারের নির্বাচনের ফলকে ইউরোপের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচনা করা হচ্ছে। অন্যদিকে নির্বচনকে সামনে রেখে বেরলুসকোনির এমন মন্তব্য স্বভাবতই পশ্চিমাদের শঙ্কিত করে তুলতে পারে।
নিজের মন্তব্য নিয়ে বিরোধীদের সমালোচনার মুখে পরে অবশ্য বেরলুসকোনি দাবি করেছেন, তার মতামত ‘অতি সরলীকরণ’ করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘ইউক্রেনের বিরুদ্ধে আগ্রাসন অযৌক্তিক ও অগ্রহণযোগ্য। ফোরজা ইতালিয়ার অবস্থান পরিষ্কার। আমরা সব সময় ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ন্যাটোর সঙ্গে থাকবো।’