আজ ভয়াল ২৭ জানুয়ারি। সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যার ১৯ বছর পূর্ণ হলো আজ। দফায় দফায় তদন্তের বেড়াজালে আটকে থাকা ভয়ানক এ হত্যাকাণ্ডের বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে কয়েক বছর আগে। কিন্তু সাক্ষি না আসাসহ বিভিন্ন জটিলতায় বিচারকার্য অনেকটাই ধীর গতিতে চলছে। এ অবস্থায় বিচার নিয়ে হতাশ নিহতদের পরিবার ও স্থানীয়রা।
২০০৫ সালের ২৭ জানুয়ারি বিকেলে হবিগঞ্জ সদর উপজেলার বৈদ্যের বাজারে ঈদ পরবর্তী এক জনসভা শেষে গ্রেনেড হামলায় নিহত হন তৎকালীন হবিগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়া। এ হামলায় শাহ এ এম এস কিবরিয়ার ভাতিজা শাহ মনজুরুল হুদা, আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুর রহিম, আবুল হোসেন এবং সিদ্দিক আলীও প্রাণ হারান। আহত হন কমপক্ষে শতাধিক নেতাকর্মী।
ঘটনার রাতেই হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট আবদুল মজিদ খান বাদী হয়ে হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা করেন।
এরপর দীর্ঘ তদন্ত শেষে সাড়ে ৯ বছর পর ২০১৪ সালের ১৩ নভেম্বর হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রোকেয়া আক্তারের আদালতে কিবরিয়া হত্যা মামলার তৃতীয় সম্পূরক অভিযোগপত্রে নতুন ১১ জনকে অন্তর্ভুক্ত করে ৩৫ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করে সিআইডি। অন্তর্ভুক্ত আসামি হলেন- সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, হবিগঞ্জ জেলা বিএনপির তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক জি কে গউছ, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সাবেক রাজনৈতিক উপদেষ্টা হারিছ চৌধুরী, মুফতি আব্দুল হাই, মুফতি তাজ উদ্দিন, মুফতি সফিকুর রহমান, মোহাম্মদ আলী, বদরুল, মহিবুর রহমান, কাজল আহমেদ ও হাফেজ ইয়াহিয়া।
শাহ এ এম এস কিবরিয়া হত্যাকাণ্ডের বিচার বিলম্বে হতাশা ব্যক্ত করেছেন মামলার বাদী ও হবিগঞ্জ-২ আসনের সাবেক এমপি অ্যাডভোকেট আব্দুল মজিদ খানও।
মামলার আসামিরা বিভিন্ন কারাগারে থাকা এবং সাক্ষীদের উপস্থিতি না হওয়ায় মামলার বিচারে বিলম্বে হচ্ছে বলে জানান সিলেটের পিপি অ্যাডভোকেট সারোয়ার আহমেদ আব্দাল।
বর্তমানে সিলেটের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে দুটি মামলার বিচার চলছে। উভয় মামলায় ১৭৩ জন সাক্ষীর মধ্যে ৪৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। আদালতে সাক্ষী উপস্থিত না হওয়ায় দিনের পর দিন তারিখ পড়ছে। ফলে কোনো অগ্রগতি হচ্ছে না মামলা দুটির।
এদিকে মামলাটি নিয়ে হতাশার শেষ নেই নিহতদের স্বজন, আহত ও স্থানীয়দের মাঝে। তবুও এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক বিচার দেখতে চান তারা। সব জটিলতার অবসান ঘটিয়ে চাঞ্চল্যকর এ মামলার বিচার অনতিবিলম্বে সম্পন্ন করা হবে বলে আশা করছেন সাধারণ মানুষ।