সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। শত শত বাড়ি-ঘর বন্যার পানিতে আক্রান্ত হওয়ায় পানিবন্দি মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রসহ বিভিন্ন উঁচু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গিয়ে আশ্রয় নিচ্ছেন। প্রত্যন্ত এলাকার সমস্ত জনপদ বন্যার পানিতে প্লাবিত হওয়ার কারণে গবাদি পশু নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন মানুষজন।
শুক্রবার (১৭ জুন) কানাইঘাটে সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ১২৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও হাওর অঞ্চল দিয়ে পানি হু হু করে বাড়ার কারনে ৯ নম্বর রাজাগঞ্জ, ৮ নম্বর ঝিঙ্গাবাড়ী, ৭ নম্বর দক্ষিণ বাণীগ্রাম ইউনিয়নের সমস্ত গ্রামীণ এলাকা বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে।
এছাড়া ৬ নম্বর সদর, কানাইঘাট পৌরসভা, লক্ষীপ্রসাদ পশ্চিম, ৫ নম্বর বড়চতুল ইউনিয়নের নতুন নতুন এলাকা বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় হাজার হাজার মানুষ দুর্বিষহ মানবেতর জীবনযাপন করছেন। অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
নৌকার অভাবে প্রত্যন্ত এলাকার পানিবন্দি মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে পারছেন না। অনেকে অনাহারে-অর্ধাহারে ঝুঁকি নিয়ে জীবনযাপন করছেন। পানিবন্দি প্রত্যন্ত অঞ্চলের আটকে পড়া মানুষদের উদ্ধারের জন্য প্রশাসনসহ সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন অনেকে।
প্রথম দফায় বন্যায় কানাইঘাট পৌর এলাকার পানি বেশি থাকলেও এবারের বন্যায় হাওয়রাঞ্চল দিয়ে হু হু করে পানি বাড়ার কারণে আরও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন মানুষজন। কানাইঘাট-দরবস্ত সড়ক দিয়ে আরও দ্রুত পানি প্রবাহিত করার কারণে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে এবং সড়কের বিভিন্ন স্থানে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।
শুক্রবার দিনভর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুমন্ত ব্যানার্জি লক্ষীপ্রসাদ পূর্ব, লক্ষীপ্রসাদ পশ্চিম ও বড়চতুল ইউনিয়নের বন্যাদুর্গত এলাকা পরিদর্শনের পাশাপাশি ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করেছেন।
এদিকে কানাইঘাটের সাতবাঁক ইউনিয়নের জয়পুর নয়াগ্রামে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে বন্যার পানিতে মাছ ধরতে গিয়ে নিখোঁজ নয়াঠাকুরেরমাটি গ্রামের নাজির উদ্দিনের পুত্র আলমাছ উদ্দিনের (৩০) লাশ শুক্রবার দুপুরের দিকে পাওয়া গেছে। ধারণা করা হচ্ছে মাছ ধরার সময় বজ্রপাতে তিনি মারা গেছেন।