কর্মসম্পাদন চুক্তি বাস্তবায়নে দেশ সেরা সিটি কর্পোরেশনের মর্যাদা ধরে রেখেছে সিলেট সিটি কর্পোরেশন। বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তির প্রতিবেদন ও প্রমাণক মূল্যায়নে দেশের সকল সিটি কর্পোরেশনের মধ্যে ২০২০-২১ অর্থ বছরে প্রথম হয় সিলেট সিটি কর্পোরেশন (সিসিক)।
বাংলাদেশ সরকারের স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তির বাস্তবায়নে সকল বিভাগ ও দপ্তরের মধ্যে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করে সিলেট সিটি কর্পোরেশন।
মঙ্গলবার (২৮ জুন) মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. মলয় চৌধুরী সঞ্চালনায় এবং স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম এমপি।
এসময় ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরের বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি স্বাক্ষর ও শুদ্ধাচার পুরস্কার ২০২১-২০২২ প্রদান অনুষ্ঠানে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর হাতে ২০২০-২০২১ অর্থবছরের কর্মসম্পাদন চুক্তি বাস্তবায়নে দেশ সেরা পুরস্কার তুলে দেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম এমপি ও স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী।
পুরস্কার গ্রহণের সময় মেয়রের সাথে ছিলেন, সিসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও সরকারের অতিরিক্ত সচিব বিধায়ক রায় চৌধুরী। দেশ সেরা স্বীকৃতির এই পুরস্কারে ক্রেস্ট ও সদনপত্র হস্তান্তর করা হয়। এর আগে ফুল দিয়ে অভিনন্দিত করা হয়।
অনুষ্ঠানে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীও বক্তব্য রাখেন। তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী এই অর্জনকে সিলেট মহানগরের সম্মানীত নাগরিকদের উৎসর্গ করেন।
তিনি বলেন, এ অর্জন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সকল কাউন্সিলরগণ, বিভাগ-শাখার কর্মকর্তা কর্মচারীদের পরিশ্রমের ফসল। বিশেষ করে নাগরিক সেবা ও উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়নে সিলেটের সম্মানীত নাগরিকদের সর্বাত্মক সহযোগিতা লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী কর্মসম্পাদন চুক্তির বাস্তবায়ন সম্ভব হয়েছে।
সিসিক মেয়র বলেন, শতভাগ সেবার মনোভাব নিয়ে সর্বাত্মক সচেনতার মধ্য দিয়ে নাগরিক সেবা ও উন্নয়ন কাজ করেছে সিসিকের সকল বিভাগ ও শাখা। সিসিকের উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়নে অন্যান্য সরকারী বেসরকারি প্রতিষ্ঠানেরও সহযোগিতার জন্য কৃতজ্ঞতা জানান মেয়র।
দেশ সেরার স্বীকৃতি অর্জনের জন্য সিসিক মেয়র বিশেষ কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম এমপি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এমপি, পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান এমপি, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ইমরান আহমদ, পরিবেশ, বন ও জলবায়ূ পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলীর প্রতি।
মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘সিসিকের ধারাবাহিক এ অর্জন নাগরিক সন্তুষ্টিরও একটি দৃষ্টান্ত। আমরা জনপ্রতিনিধি, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কেবল আমাদের দায়িত্ব পালন করেছি। দেশের সকল সিটি কর্পোরেশনের মধ্যে কর্মসম্পাদন চুক্তির বাস্তবায়নে প্রথম হওয়ায় নাগরিক সেবা প্রদান ও উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়নে আমাদের আরো দায়িত্বশীল ও দায়বদ্ধ করে তুলেছে।’
আগামীতে সেবার মান বৃদ্ধি ও সুষম উন্নয়ন বাস্তবায়নে সিসিকের কাউন্সিলর, সংরক্ষিত কাউন্সিলর, সকল পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আরো বেশি দায়িত্বশীল হওয়ার আহবান জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান, সহকারী প্রকৌশলী জয়দেব বিশ্বাস প্রমুখ।
এর আগে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের পক্ষে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বিধায়ক রায় চৌধুরী স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরীর সাথে ২০২২-২৩ অর্থবছরের কর্মসম্পাদন চুক্তি স্বাক্ষর করেন।
প্রসঙ্গত, সরকারের নির্ধারিত মূল্যায়ন পদ্ধতি অনুসারে অর্জিত ১০০ নম্বরের মধ্যে ৯৭.১০ পেয়ে দেশের সকল সিটি কর্পোরেশনের মধ্যে প্রথম ও ২০টি দপ্তর সংস্থার মধ্যে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করে সিলেট সিটি কর্পোরেশন।
অনন্য এই অর্জন ও বন্যাকবলিত সিলেট অঞ্চল পরিদর্শন শেষে সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর মতবিনিময় সভায় মেয়রসহ সিসিকের কর্মতৎপরতা প্রশংসা কুড়ানোয় বিশেষ সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে সিসিকের নাগরিক সেবাসংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সিসিক মেয়রকে প্রধানমন্ত্রী স্বতঃস্ফূর্তভাবে ‘মেয়র ভালো, কাজ করে…’ বলে প্রশংসাসূচক মন্তব্য করা সামগ্রিক সন্তুষ্টির ফসল। নিরবিচ্ছিন্ন কর্মযজ্ঞে দেশ সেরার স্বীকৃতির পাশাপাশি মেয়রকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসার জন্য সিসিকের সব দপ্তর কৃতজ্ঞতাও প্রকাশ করে।