সিলেটের ওসমানীনগরে বন্যার পানি বৃদ্ধি পেয়ে অবস্থা ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়েছে। মানুষ আশ্রয়ের সন্ধানে ছুটছেন। এদিকে আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। মানবেতর জীবন যাপন করছেন বানভাসী মানুষ।
বুধবার (২২ জুন) পানি প্রায় ১ ফুট বেড়েছে। শতাধিক গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি। এদিকে সংকটময় সময়ে এক শ্রেণি অসাধু ব্যবসায়ীরা নিত্যপন্য জিনিসপত্রের মূল্য বৃদ্ধি করে দিয়েছে। ফলে পানিবন্দী মানুষের দুর্ভোগ আরো বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ওসমানীনগর উপজেলা সূত্রে জানা যায়, ওসমানীনগরের ৮টি ইউনিয়নের মানুষের জন্য ৪৯ টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এতে আশ্রয় নিয়েছেন ১ হাজার ১শ ৭০টি পরিবার। লোক সংখ্যা প্রায় ৪ হাজার ৬শ ৮০ জন। আশ্রিত গবাদি পশুর গুরু হচ্ছে ৩শ ২৫ টি, ছাগল ৬শ ৭২টি। বুধবার পর্যন্ত সরকারী বরাদ্দ ৪৮ টন চাল ও নগদ ১০ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা। ৮টি ইউনিয়নে বিতরণ চলমান রয়েছে ২২ টন চাল ও ৪ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা। মওজুদ রয়েছে ২১ টন চাল ও ৬ লক্ষ টাকা। এ বরাদ্দ পর্যাপ্ত নয় বলে সচেতন মহল মনে করছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রতিটি আশ্রয় কেন্দ্রের চারিদিকে কোমর পানি। গবাদি পশুর সাথে আশ্রিত মানুষ বসবাস করছেন। সরকারী কোন ত্রাণ না পাওয়ায় তারা অর্ধাহারে অনাহারে দিন কাটাচ্ছেন।
এদিকে নিত্যপন্য জিনিসের মূল দ্বিগুণ বৃদ্ধি করেছে অসাধু ব্যবসায়ীরা। উপজেলার ব্যবসায়িক প্রাণ কেন্দ্র গোয়ালাবাজরে মোমবাতি পাওয়া যাচ্ছে না। মূল বৃদ্ধির ফলে সামাজিক সংগঠনগুলো ত্রাণ বিতরণে এগিয়ে আসতে হিমশিম খাচ্ছে।
এদিকে শ্রীমঙ্গল থেকে ক্রয় করে আনতে হচ্ছে ত্রাণ বিতরণকারী সামাজিক সংগঠনগুলোকে। ২৫ টাকার মোমবাতি ৮০-১০০ টাকা, চিড়া বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকা মূল্যে, মুড়ি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকা ধরে, কেরোসীন বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকা মূল্যে, দিয়াশলাই ডজন বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা, এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডার ১৫শ টাকা ধরে। আর আলু পেঁয়াজের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে কেজিতে ১০ টাকা।
ওসমানীনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার নীলিমা রায়হানা বলেন, বুধবার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে ১ থেকে দেড় ফুট। বন্যার্থীদের জন্য সরকারী বরাদ্দগুলো স্থানীয় চেয়ারম্যানগণের মাধ্যমে বিতরণ কার্যক্রম চলছে।