মুরারিচাঁদ কলেজের ইতিহাস ও ঐতিহ্য এ অঞ্চলের মানুষের গৌরবোজ্জ্বল অর্জন। সেই অর্জিত ইতিহাস ও ঐতিহ্য শতাব্দীকালের স্মৃতিবাহী ও কালের স্বাক্ষী। সংস্কতিচর্চা, বুদ্ধিচর্চা ও নারীজাগরণে এমসি কলেজের অবদান অনস্বীকার্য। এজন্য বিপন্ন এমসি কলেজের ঐতিহ্য সংরক্ষণে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
পরিবেশ ও ঐতিহ্য- সংরক্ষণ ট্রাস্টের উদ্যোগে সিলেটে বিশ্ববিদ্যালয় আন্দোলনের ইতিহাস গবেষণা গ্রন্থে ‘মুরারিচাঁদ কলেজের ইতিহাস ও ঐতিহ্য অনুষঙ্গ এবং প্রাসঙ্গিক ভাবনা’ শীর্ষক মুক্ত আলোচনা ও আড্ডায় বক্তারা একথাগুলো বলেন।
শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় নগরীর বই বিপণণী প্রতিষ্ঠান বাতিঘরে পরিবেশ ও ঐতিহ্য সংরক্ষণ ট্রাস্ট, সিলেট এর ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ডা. মোস্তফা শাহজামান চৌধুরী বাহার এর সভাপতিত্বে ও ট্রাস্টি অ্যাডভোকেট গোলাম সোবহান চৌধুরী দিপনের সঞ্চালনায় গবেষণা গ্রন্থের আলোচ্য বিষয়ের প্রতিপাদ্যে মূল আলোচনা ও আড্ডার সূত্রপাতে বক্তব্য উপস্থাপন করেন গ্রন্থের লেখক শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. জফির সেতু।
মূল আলোচনায় তিনি বলেন, এমসি কলেজের ক্যাম্পাস একটা ঐতিহ্য, আসাম টাইপের ঘর অনেক বড় ঐতিহ্য, নিজস্ব বিদ্যুৎ কেন্দ্র, হাসপাতাল, ওয়ার্কশপ এমসি কলেজের ছিল। ১৯১৭ সালে এমসি কলেজের প্রথম ম্যাগাজিন প্রকাশিত হয়। ১৯২১ থেকে বছরের ৪টি ম্যাগাজিন প্রকাশিত হতো। এমসি কলেজের বস্তুগত ও অবস্তুগত ঐতিহ্য আজ বিপন্ন। বস্তুগত ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও অবস্তুগত স্থাপনা সংস্কার জরুরি। ঐতিহ্য বিপন্ন হওয়ার পেছনে আমাদের দায় আছে। এই অবস্থান থেকে ফিরিয়ে আনতে আমাদের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
মুক্ত আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক রেজিস্টার ও বাপা সিলেটের প্রেসিডেন্ট ড. জামিল আহমদ চৌধুরী, সিলেট মহিলা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ সুধাংশু শেখর তালুকদার ও অধ্যক্ষ হায়াতুল ইসলাম আখঞ্জি, মদনমোহন কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ লে. কর্ণেল (অব.) আতাউর রহমান পীর ও অধ্যক্ষ আবুল ফতেহ ফাত্তাহ, বিশিষ্ট সাংবাদিক নজরুল ইসলাম বাসন ও আল আজাদ, বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও তথ্যচিত্র নির্মাতা নিরঞ্জন দে যাদু, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. মো. ফারুক উদ্দিন, স্থাপত্য বিভাগের প্রধান ড. কৌশিক সাহা ও ড. শাহাদাত হোসেন চৌধুরী, এমসি কলেজের ছাত্র সংসদের সাবেক নির্বাচিত কর্মকর্তা এম. শাহরিয়ার কবির সেলিম, সাংস্কৃতিক সংগঠন ও উদীচি সিলেটের সাবেক সভাপতি মনির হেলাল, সুপ্রীমকোর্টের আইনজীবী ও পরিবেশ ও ঐতিহ্য সংরক্ষণ ট্রাস্ট, সিলেটের ট্রাস্টি অ্যাডভোকেট সুদীপ্ত অর্জুন।
সভাপতির বক্তব্যে ডা. মোস্তফা শাহজামান চৌধুরী বাহার বলেন, ‘এমসি কলেজের নিদর্শনসমূহ সংরক্ষণ করার ব্যাপারে নাগরিক ঐক্যমত গঠিত হয়েছে। সকল মুরারিয়ান ও সিলেটের মানুষ ঐতিহ্য সংরক্ষণ করে কলেজের উন্নয়নের কথা ভাবছেন। ভাবিকালের মানুষদের নিকট আমাদের গৌরবের কথা পৌঁছে দিতে আমাদের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের নিদর্শন সমূহ সংরক্ষণ করা জরুরী। সংরক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহনের জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আমরা আহ্বান ও দাবি জানাই।’