ঈদুল ফিতরের ছুটিতে পর্যটকের ঢল নেমেছে সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে। আজ মঙ্গলবার (২৫ এপ্রিল) ঈদের চতুর্থ দিনেও দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এখানকার পাহাড়, পাথর আর স্বচ্ছ জলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে এসেছেন পর্যটকেরা।
উপজেলার জাফলং, বিছনাকান্দি, সোয়াম্প ফরেস্ট রাতারগুল ছাড়াও পানতুমাই ঝর্না, জাফলং চা-বাগান ও মায়াবী ঝর্না পর্যটকদের পদচারণায় মুখর। পরিবার-পরিজন ও বন্ধুবান্ধব নিয়ে পর্যটন স্থানগুলোতে ঘুরে বেড়াচ্ছেন তাঁরা। প্রকৃতির কাছাকাছি আসতে পেরে ও রূপ উপভোগ করতে পেরে খুশি সবাই।
তবে গত কয়েকদিন পর্যটকের বেশি ভিড় ছিল জাফলংয়ে। দর্শনার্থীদের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ছিলেন তরুণ-তরুণী। নদী, স্বচ্ছ জল আর ভারতের মেঘালয়ের পাহাড়ের দৃশ্য দেখার পাশাপাশি এখানকার খাসিয়া পল্লীও আকৃষ্ট করেছে ভ্রমণপিয়াসীদের।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে জাফলংয়ে জিরো পয়েন্টে গিয়ে দেখা যায়, সকাল থেকেই এখানে দল বেঁধে পর্যটকেরা ঘুরে বেড়াচ্ছেন। দুপুরের দিকে সব বয়সের পর্যটকেরা জিরো পয়েন্টে এসে ভিড় করেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দর্শনার্থীর সংখ্যাও বাড়তে থাকে। নৌকা নিয়ে অনেক পর্যটককে মায়াবী ঝর্না ও খাসিয়া পল্লীতে ছুটতে দেখা যায়।
এর আগে ঈদের দ্বিতীয় দিন সকালে প্রায় ৩ ঘণ্টার মতো বৃষ্টি থাকায় পর্যটকেরা কিছুটা সমস্যায় পড়েছিলেন। পরে আবহাওয়া অনুকূলে আসে। বৃষ্টি কমার পর পর্যটকেরা জিরো পয়েন্টে ছুটে আসেন। পর্যটকদের নিরাপত্তায় এখানে ট্যুরিস্ট পুলিশ, থানার পুলিশ ও বিজিবির সদস্যরা কাজ করে যাচ্ছেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে আসা এক পর্যটক বলেন, ঈদের ছুটিতে পরিবারের সদস্যরা মিলে ঘুরতে এসেছি। জাফলং আসলেই খুব সুন্দর। পাহাড় আর পাথরের সৌন্দর্য মুগ্ধ করেছে।
ঢাকা থেকে আসা তরুণী শারমিন নাহার বলেন, এখানকার সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়েছি। পরিবার নিয়ে বেড়াতে এসেছি। খুব ভালো লাগছে।
এদিকে প্রচুর পর্যটক আসায় এখানকার হোটেল-মোটেলগুলোতে ছিল ভিড়। রেস্তোঁরাগুলোতেও ব্যস্ততা বেড়ে যায়। পর্যটকের সমাগমে খুশি এখানকার পর্যটন ব্যবসায়ীরাও। তাঁদের বেচাকেনাও ভালো।
ইয়াকুব আহমেদ নামে এক ব্যবসায়ী বলেন, ঈদ উপলক্ষে সকাল থেকেই এখানে প্রচুর পর্যটক এসেছেন। বেচাকেনাও ভালো হয়েছে। তবে দুইদিন সকালে কিছুটা বৃষ্টি হওয়ায় বেচাকেনা কমে যায়। বৃষ্টি না থাকলে বেচাকেনা আরও বাড়ত। আজ বৃষ্টি না থাকায় ভালোই বেচাকেনা হচ্ছে। আশা করছি সামনে বেচাকেনা আরও বাড়বে।
জাফলং ট্যুরিস্ট পুলিশের ইনচার্জ মো. রতন শেখ বলেন, ঈদের ছুটিতে পর্যটকে মুখরিত জাফলং। ঈদের পরদিন থেকে কয়েক লাখ পর্যটক বেড়াতে এসেছেন। পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তায় ট্যুরিস্ট পুলিশের সদস্যরা কাজ করছেন। অতীতের মতো পানিতে না নামার জন্য আমরা মাইকিং করে পর্যটকদের সতর্ক করে যাচ্ছি। এছাড়া পর্যটকেরা বেড়াতে এসে যাতে কোনোভাবেই ভোগান্তিতে না পড়েন সেদিকে আমাদের নজর রয়েছে।