ইসরায়েল-গাজা যুদ্ধের পঞ্চম দিনে মৃতের সংখ্যা প্রায় ৩ হাজার ৬০০ জনে পৌঁছেছে। ভয়াবহ এই যুদ্ধে ইসরায়েলের জন্য নতুন চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ।
বিশ্লেষকদের মতে, ইসরাইল-হামাসের এই সংঘর্ষকে একটি বৃহত্তর আঞ্চলিক যুদ্ধের দিকে ঠেলে দিতে পারে তেহরান-সমর্থিত লেবাননের হিজবুল্লাহ সংগঠনের হস্তক্ষেপ আর ইরানের ভূমিকা। তবে হামাসের সঙ্গে কোনো ধরনের সম্পৃক্ততা নেই বলে জানিয়েছে ইরান সরকার। এএফপি।
বুধবারও ইসরাইলে অ্যান্টি-ট্যাংক বিধ্বংসী হামলা চালিয়েছে হিজবুল্লাহ। চলমান এই ত্রিমুখী সংঘর্ষের মধ্যেই ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে আগ্রহী কিছু প্রতিবেশী আরব দেশ এই পরিস্থিতিকে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে ভূমিকা পালনের সুযোগ হিসাবে দেখছে। মিসর ও সৌদি আরবের মতো গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক শক্তিও মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করে নিজেদের আন্তর্জাতিক মর্যাদা বাড়াতে অতীতের চেয়ে বেশি আগ্রহী বলে মনে হচ্ছে। সংঘাত নির্মূলে কাজ করছে বলে ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসকে টেলিফোনে জানিয়েছেন সৌদির ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান।
তবে হিজবুল্লাহ দ্বিতীয়বারের মতো ইসরাইলে আক্রমণ চালাতে পারে বলেও ধারণা করছেন অনেকে। চলতি সপ্তাহে হিজবুল্লাহ জানিয়েছিল, দক্ষিণ লেবাননে ইসরাইলের হামলায় তাদের তিন সদস্য নিহত হয়েছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক যুক্তরাষ্ট্রের একজন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘হিজবুল্লাহর দ্বিতীয়বারের আক্রমণ নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। আর তাদের দ্বিতীয়বার আক্রমণ হবে একটি ভুল সিদ্ধান্ত।’
জেনেভা-ভিত্তিক সেন্টার ফর স্টাডিজ অ্যান্ড রিসার্চ অন দ্য আরব ওয়ার্ল্ড অ্যান্ড দ্য মেডিটেরিয়ানের (সিইআরএমএএম) পরিচালক হোসনি আবিদি বলেন, ‘হিজবুল্লাহর এই আক্রমণ লেবাননের স্বার্থে নয়। কারণ দেশটি একটি বড় রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।’
আরও পড়ুন : লেবানন থেকে ইসরায়েলে বড় হামলার শঙ্কা, আকাশপথে হিজবুল্লাহ
দক্ষিণ লেবাননে হিজবুল্লাহর কার্যকলাপকে একটি সতর্কতা হিসাবে উল্লেখ করেছেন ইনস্টিটিউট ফর মেডিটেরিয়ান মিডল ইস্ট রিসার্চ অ্যান্ড স্টাডিজের (আইআরইএমএমও) ভাইস প্রেসিডেন্ট অ্যাগনেস লেভালোইস।
তবে কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশনসের সিনিয়র ফেলো স্টিভেন কুক বলেন, আরব সেনাবাহিনী ও ইসরাইলের মধ্যে কোনো ধরনের ‘আন্তঃরাষ্ট্রীয় সংঘর্ষ’ হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
আরও পড়ুন : অন্ধকারে গাজা, বন্ধ হয়ে গেল একমাত্র বিদ্যুৎকেন্দ্র
ইরান দীর্ঘদিন ধরে হামাসকে আর্থিক ও সামরিকভাবে সমর্থন দিচ্ছে বলে মনে করছেন অনেকে। যদিও এটি অস্বীকার করেছেন দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আল খামেনি।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁও মঙ্গলবার বলেছেন, এটি ‘সম্ভাব্য’ যে হামাসের হামলায় বাইরের ‘সাহায্য’ রয়েছে। যদিও ইরানের ‘প্রত্যক্ষভাবে জড়িত থাকার’ কোনো আনুষ্ঠানিক চিহ্ন নেই বলে জানিয়েছেন তিনি।