বসন্তবৌরি (Barbet) কাঠঠোকরার সঙ্গে সম্পর্কিত সচরাচর রঙচঙে এক দল উষ্ণমন্ডলীয় ছোট পাখি। পৃথিবীব্যাপী এদের প্রায় ৮৪ প্রজাতির মধ্যে বাংলাদেশে রয়েছে পাঁচ প্রজাতি। এরা সাধারণত মিশ্র-চিরসবুজ বনে বেশি থাকে।
সম্প্রতি কালবৈশাখী ঝড়ে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সিলেটের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল করিম কিমের হাউজিং এস্টেট-এর বাসায় কাঁঠাল ও নিম গাছের দুটি ডাল ভেঙে পড়ে। এরমধ্যে কাঁঠাল গাছের খোড়লে বাসা ছিল একজোড়া বসন্তবৌরি পাখির।
ঝড়ের তান্ডবে খোড়ল ভেঙ্গে কাঁঠালের ডাল পড়ে রাস্তায়। সেখানে পাখি দুটিকে পড়ে থাকতে দেখা যায়। ঝড় থামলেও তখনো অঝোরে বৃষ্টি হচ্ছিল। দো’তলার বারান্দা থেকে পাখিদুটিকে দেখতে পায় আব্দুল করিম কিমের ক্লাস দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়ুয়া মেয়ে আয়রা আমারা চৌধুরী।
শিশু আয়রা পাখি দুটিকে উদ্ধার করতে নিচে নেমে আসে। ততক্ষণে রাস্তা থেকে একটা পাখি নিয়ে এক পথচারী দৌড়ে পালায়। নিচে নেমে তখন একটি পাখির দেখা মেলে। পাখিটি পায়ে চোট পেয়ে আহত ছিল। একদিন পরিচর্যার পর আহত পাখিটিকে গতকাল সন্ধ্যায় সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণী অধিকার বিষয়ক সংগঠন প্রাধিকার-এর কাছে হস্তান্তর করা হয়। আহত এ পাখিটিকে প্রাধিকার-এর পক্ষে গ্রহণ করেন সংগঠনের উপদেষ্টা ভ্যাটেনারি সার্জন ও সহযোগী অধ্যাপক ড. অনিমেষ চন্দ্র রায়।
আব্দুল করিম কিম জানান, বসন্তবৌরি পাখিটি বসন্তকালেই বেশি দেখা মেলে। এরা গাছের ডালে বসে ‘পুক্রক-পুক্রক-পুক্রক’ করে তিনবার থেমে থেমে ডাকে। এদের ডাক অনেক দূর থেকে কানে ভেসে আসে। গাছের মগডালে অথবা কোন গাছের সবুজ পাতার আড়াল থেকে অবিরত ডেকে চলে বসন্তবৌরি।
তিনি আরও জানান, পাখিটি ঝড়ের কারণে হয়তো কাঁঠাল গাছের এই খোড়লে আশ্রয় নিয়েছিল কিন্তু ঝড়ে ডালটি ভেঙ্গে পড়ায় পাখিটির পায়ে চোট লাগে। চিকিৎসা শেষে প্রাধিকারের কর্মীরা পাখিটিকে প্রকৃতিতে অবমুক্ত করবেন বলে জানিয়েছেন।
সিলেট ভয়েস/এএইচএম