প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আশ্রয়ণ একটি মানুষের ঠিকানা। জীবন-জীবিকার একটি সুযোগ, বেঁচে থাকা, স্বপ্ন দেখা এবং তা বাস্তবায়ন করার। যে বাংলাদেশ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীন করে দিয়ে গেছেন, সে বাংলাদেশের কোনও মানুষ যেন ঠিকানাবিহীন না থাকে, তাদের জীবনটা যেন অর্থহীন হয়ে না যায়, তাদের জীবনটা যেন সুন্দর হয়, সেই লক্ষ্য নিয়েই এই উদ্যোগটা সর্বপ্রথম বঙ্গবন্ধু নিয়েছিলেন। তাঁরই পদাঙ্ক অনুসরণ করে তাঁর হাতে গড়া বাংলাদেশে প্রতিটি মানুষের জন্য অন্তত বসবাসের একটি জায়গা করে দেওয়ার লক্ষ্য নিয়েই এই আশ্রয়ণ।
বৃহস্পতিবার (২১ জুলাই) সকালে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে ভূমিহীন-গৃহহীন আরও ২৬ হাজার ২২৯টি পরিবারকে পাঁচটি আশ্রয়ণ প্রকল্পের অধীনে ঘর হস্তান্তরের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। এসময় তিনি উপকারভোগীদের কাছে ঘরগুলো হস্তান্তরে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও কর্মকর্তাদের অনুমতি দেন। ঘর হস্তান্তরের মাধ্যমে পঞ্চগড় ও মাগুরা জেলার সব উপজেলাসহ দেশের ৫২টি উপজেলা ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত হওয়ার ঘোষণাও দেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সরাসরি যুক্ত হন ৫টি প্রকল্প এলাকার সঙ্গে। প্রকল্পগুলো হচ্ছে—লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরকলাকোপা আশ্রয়ণ প্রকল্প, বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার গৌরম্ভা আশ্রয়ণ প্রকল্প, ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার চর ভেলামারী আশ্রয়ণ প্রকল্প, পঞ্চগড় সদর উপজেলার মাহানপাড়া আশ্রয়ণ প্রকল্প এবং মাগুরা জেলার মহম্মদপুর উপজেলার জঙ্গালিয়া আশ্রয়ণ প্রকল্প।
মুজিববর্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা— একটি মানুষও গৃহহীন ও ভূমিহীন থাকবে না। এই লক্ষ্যে প্রথম পর্যায়ে ২০২১ সালের ২৩ জানুয়ারি জমির মালিকানাসহ ৬৩ হাজার ৯৯৯টি ঘর হস্তান্তর করা হয়। দ্বিতীয় পর্যায়ে ২০ জুন জমির মালিকানাসহ ৫৩ হাজার ৩৩০টি ঘর হস্তান্তর করা হয়। প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ে নির্মাণ করা একক ঘরের সংখ্যা ১ লাখ ১৭ হাজার ৩২৯টি। চলমান তৃতীয় পর্যায়ে মোট বরাদ্দকৃত একক ঘরের সংখ্যা ৬৭ হাজার ৮০০টি, যার মধ্যে গত ২৬ এপ্রিল হস্তান্তরিত হয় ৩২ হাজার ৯০৪টি। আজ হস্তান্তর হবে ২৬ হাজার ২২৯টি। এছাড়া আরও নির্মাণাধীন রয়েছে ৮ হাজার ৬৬৭টি ঘর।
পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক জহুরুল ইসলাম জানান, প্রধানমন্ত্রী গণভবন প্রান্ত হতে ভার্চুয়ালি পঞ্চগড় জেলায় পঞ্চগড় সদর উপজেলায় ৩নং পঞ্চগড় সদর ইউনিয়ন পরিষদের অন্তর্ভুক্ত মাহানপাড়া আশ্রয়ণ প্রকল্পের উপকারভোগীদের সঙ্গে কথা বলেন এবং পঞ্চগড় জেলাকে প্রথম ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত জেলা হিসেবে ঘোষণা দেন।
আশ্রয়ণ প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায়ে২০২১-২২ অর্থবছর পর্যন্ত বরাদ্দকৃত ঘরের সংখ্যা ১ লাখ ৮৫ হাজার ১২৯টি। ওই অর্থবছর পর্যন্ত একক ঘরের জন্য বরাদ্দকৃত অর্থের পরিমাণ ৪ হাজার ২৮ কোটি ৯৬ লাখ টাকা।