উচ্চ আদালতের আদেশ অমান্য করে সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার জাউয়াবাজার ইজারা দেওয়ার বন্দোবস্ত করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। এতে এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন উপজেলার জাউয়া গ্রামের শফিক উদ্দিনের ছেলে মো. আজির উদ্দিন। বুধবার (১৭ এপ্রিল) সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘১৪২৯ বাংলা সালের জন্য তিনি ২ কোটি ২২ লাখ ৩০ হাজার ৬৫০ টাকায় জাউয়াবাজার ইজারা নিয়েছিলেন । পরের বছর ১ কোটি ৬৪ লাখ ৪৬ হাজার ৩০০ টাকায় বাজারটি ইজারা নেন কৈতক গ্রামের নূর উদ্দিনের ছেলে ফাহিম আহমদ। কিন্তু ১৪৩১ সালের ইজারা বিজ্ঞপ্তি প্রকাশে অত্যন্ত গোপনীয়তা অবলম্বন করে উপজেলা প্রশাসন। ব্যাপক প্রচার না করেই গত ১৫ ফেব্রুয়ারি দরপত্রের শেষ তারিখ নির্ধারণ করে গোপন আঁতাতের মাধ্যমে ইজারার নাটক সাজিয়ে দেবেরগাঁওয়ের জাহাঙ্গীর আলমকে মাত্র ১ কোটি ৪০ লক্ষ টাকায় ইজারা দেওয়ার প্রস্তুতি নেন।’
তিনি আরো বলেন, ‘বিষয়টি জানাজানি হলে আমি গত ১৯ ফেব্রুয়ারি উপজেলা চেয়ারম্যান ও নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর পূনরায় দরপত্র আহ্বানের আবেদন করি। কিন্তু আমার আবেদন আমলে না নিয়ে জাহাঙ্গীর আলমকেই ইজারা প্রদানের ঘোষণা দেন।’
আজির উদ্দিন বলেন, ‘হাটবাজার ইজারা নীতিমালা অমান্য করে জাহাঙ্গীর আলমকে জাউয়াবাজার ইজারা দেয়ার অভিযোগে হাইকোর্টে রীট পিটিশন (নং ৩৩২০/২০২৪) দায়ের করা হয়। বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও খিজির হায়াৎ-এর বেঞ্চে শুনানী শেষে ইজারা প্রদানের প্রক্রিয়া তিন মাসের জন্য স্থগিতের আদেশ দেয়। এ আদেশ চ্যালেঞ্জ করে জাহাঙ্গীর আলম সুপ্রীম কোর্টের আপিল বিভাগে সিএমপি (নং ২৯৮/২০২৪) আপিল দায়ের করেন। আপিল শুনানী শেষে চেম্বার আদালত ২২ এপ্রিল, ২০২৪ পর্যন্ত জাউয়াবাজার ইজারা কার্যক্রমে স্থগিতাদেশ জারি করেন।’
আজির উদ্দিনের অভিযোগ, ‘আদালতের এই স্থগিতাদেশ আমলে না নিয়ে জাহাঙ্গীর আলমকে ইজারাদার ঘোষণা করতে অনঢ় প্রশাসন। ফলে স্থগিতাদেশ থাকা অবস্থায় বর্তমান ইজারাদার ফাহিম ইজারা মাশুল আদায় চলমান রাখার আবেদন করলেও উপজেলা প্রশাসন তা উপেক্ষা করছে। উপজেলা প্রশাসন কমমূল্যে জাহাঙ্গীর আলমকে ইজারা দেওয়ার সকল বন্দোবস্ত করে রেখেছেন।’
উচ্চ আদালতের আদেশ মেনে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থে জাহাঙ্গীর আলমকে জাউয়াবাজার ইজারা কার্যক্রমে অংশ নেয়ার সুযোগ না দিতে প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানান আজির উদ্দিন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন হেলাল উদ্দিন, সৈয়দুল ইসলাম, লোকমান হোসেন, মিজানুর রহমান আবু ও লিমন মিয়া।