ব্রাজিল যেন হাসিখুশি এক পরিবার। অনুশীলন পর্বটাও বেশ উপভোগ করতে জানে তিতের দল। কোনো ভারিক্কি আবহ নেই। সাজানো-গোছানো সংসার। সেই পরিবারকে আজ বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) রাতে মরুর বুকে বড় পরীক্ষায় নামতে হচ্ছে। বিশ্বকাপ শিরোপা পুনরুদ্ধার তথা ‘হেক্সা’ জয়ের মিশন যে শুরু হচ্ছে আজ।
সার্বিয়ার বিপক্ষে পরীক্ষা দেওয়ার আগে নিজেদের প্রস্তুতিটা জোরালো করে নিয়েছে ব্রাজিল। আর এই পরিবারের বড় তারকা নেইমার জুনিয়র। যার রয়েছে আগের দুই বিশ্বকাপ খেলার অভিজ্ঞতা। সেই অভিজ্ঞতার ঝুলি উন্মুক্ত করে মরুর বুকে শুরু থেকে ঝলক দেখাবেন-সেই প্রত্যাশা সতীর্থ থেকে শুরু করে সমর্থকদেরও।
এবার সেলেসাওরা খুব করে চাইছে কাতার বিশ্বকাপ ঘরে তুলতে। সেভাবেই প্রস্তুতি নিয়েই দোহাতে এসেছে সর্বোচ্চ পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। এই মুহূর্তে বিশ্বে তিন তারকার নাম বেশি উচ্চারিত হয়ে আসছে। লিওনেল মেসি, ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো ও নেইমার জুনিয়র। কাতার বিশ্বকাপে মেসির শুরুটা মোটেও ভালো হয়নি। হারের বেদনা নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে। নেইমারের দিনেই পরীক্ষা দিতে মাঠে নামছেন রোনালদোরাও।
তবে নেইমার ও তার সতীর্থদের মাঠে নেমেই পরীক্ষাতে সফল হতে হবে যে করে হোক না কেন। নেইমার তা ভালো করে জানেন। কিছু একটা যে করতে হবে। বিশ্বকাপ শুরুর আগে যে মগজে তা গেঁথেও নিয়েছেন। এই যেমন সাধারণ যে দলটা বিশ্বকাপ জেতে তাদের জার্সি ও শর্টসে সেই কয়টি তারকা আঁকা থাকে।
নেইমার কী করলেন? বিশ্বকাপ শুরুর আগে পাঁচটি বিশ্বকাপ জেতা ব্রাজিলের শর্টসে ছয় তারকা দিয়ে কী ইঙ্গিত করলেন? এর মানে দাঁড়াচ্ছে মরুর বুকে ঝড় তুলতে প্রস্তুত পেলে-রোনালদো-কাফুদের উত্তরসূরিরা।
আর এজন্য নেইমারকে বড় দায়িত্ব নিয়ে খেলতে হবে। বলের জোগান যেমন দিতে হবে। ঠিক তেমনি গোল করতেও পারঙ্গম হতে হবে। আগের দুই বিশ্বকাপে নেইমার কিন্তু খারাপ করেননি। ২০১৪ সালে বিশ্বকাপে অভিষেক হয় তার। কোয়ার্টার ফাইনালে তার দল কলম্বিয়ার বিপক্ষে জিতলেও চোট নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে এই ফরোয়ার্ডকে। জার্মানির বিপক্ষে মাঠেই নামা হয়নি তার। বেলো হরিজন্তের সেই ম্যাচে নিজ দলের ৭-১ গোলে হারের লজ্জা দেখতে হয়েছে।
আর ২০১৮ বিশ্বকাপে তো কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে ছিটকে যেতে হয়েছে। তারপরেও নেইমারের গোলসংখ্যা কিন্তু কম নয়,৬টি। প্রথমটিতে চারটি ও পরেরটিতে দুটি লক্ষ্যভেদ ছিল তার। এবার তো কাতার আসার আগে ভালো ফর্মে আছেন। পিএসজির হয়ে ১৫টি গোল করেছেন, আছে ১২টি অ্যাসিস্ট।
এছাড়া ৩১ বছর বয়সী ফরোয়ার্ডের ধরেই নেওয়া হচ্ছে এটাই শেষ বিশ্বকাপ। যদি তাই হয় তাহলে তো তেড়েফুঁড়ে খেলারই তো কথা। তাতে করে নিজের গোলসংখ্যা বাড়িয়ে নেওয়া ছাড়াও দলের জয়ে বড় ভূমিকা থাকবে।
মরুর বুকে প্রথম ম্যাচে তাই নিশ্চয় দলের অভিজ্ঞ তারকা নেইমার ও সতীর্থরা সাম্বা নৃত্য নাচার সুযোগটা মিস করবেন না!