সিলেট সিটি করপোরেশন কর্তৃক একতরফা ভাবে অতি উচ্চহারে হোল্ডিং ট্যাক্স আরোপের প্রতিবাদে এবং অযৌক্তিক, গণবিরোধী কর আরোপের সিদ্ধান্ত অনতিবিলম্বে বাতিল করার দাবী জানিয়ে সিলেটের নাগরিকবৃন্দ আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় সিটি কর্পোরেশনের মেয়র বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছেন।
সোমবার (১৩ মে) দুপুর ২টায় সিলেটের কোর্ট পয়েন্টে জমায়েত হয়ে মিছিলসহকারে সিটি কর্পোরেশনের মেয়র বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। মেয়র অনুপস্থিত থাকায় স্মারকলিপি গ্রহণ করেন সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী।
স্মারকলিপি প্রদানকালে সিলেটের নাগরিকবৃন্দ আহবায়ক এমাদ উল্লাহ শহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে উপস্থিত ছিলেন দরগাহ এ হযরত শাহজালাল (রঃ) মোতাওয়াল্লী সরেকওম ফতেউল্লাহ আল আমান, জাসদ সিলেট জেলা সভাপতি লোকমান আহমদ, সিলেট প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ইকবাল সিদ্দিকী, বিশিষ্ট মানবাধিকার কর্মী ব্লাস্টের সাবেক সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট মোঃ ইরফানুজ্জাসান চৌধুরী, সাম্যবাদী দলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ব্রজপোপাল, গণতন্ত্রী পার্টির জেলাা সভাপতি মো: আরিফ মিয়া, সিপিবি জেলা সভাপতি সৈয়দ ফরহাদ হোসেন, বাসদ জেলা আহবায়ক আবু জাফর, সিনিয়র আইনজীবী কল্যাণ চৌধুরী, বিশিষ্ট সমাজসেবক সোলেমান আহমদ, নাগরিক মৈত্রীর আহবায়ক অ্যাডভোকেট সমর বিজয় সী শেখর, সিলেট আইনজীবী সমিতির সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট হুমায়ূন রশীদ সোয়েব, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের জেলা সভাপতি সিরাজ আহমদ, জাসদ মহানগর সাধারণ সম্পাদক গিয়াস আহমদ, গণতন্ত্রী পার্টির জেলা সাধারণ সম্পাদক জুনেদুর রহমান চৌধুরী, সিপিবি জেলা সাধারণ সম্পাদক খায়রুল হাছান, সাম্যবাদী আন্দোলন জেলা সমন্বয় সুশান্ত সিনহা, সিলেটের নাগরিকবৃন্দের সদস্য সচিব প্রণব জ্যোতি পাল, অ্যাডভোকেট মহিতোষ দেব মলয়, বাসদ মার্কসবাদী নেতা সঞ্জয় দাস ,ন্যাপ জেলা সাধারণ সম্পাদক ইশমত ইবনে ইসহাক সহ সিলেটের বিভিন্ন রাজনৈতিক, পেশাজীবি সংগঠনের প্রতিনিধি ও ২৭টি ওয়ার্ড এর ভুক্তভোগী নাগরিকবৃন্দ।
সিলেটের নাগরিকবৃন্দ এর স্মারকলিপিতে বলা হয়, গত ২৩ এপ্রিল, ২০২৪ তারিখে সিলেট সিটি কর্পোরেশন এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ৪২টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২৭টি পুরাতন ওয়ার্ডের ৭৫ হাজার ৪৩০টি হোল্ডিং এর উপর আরোপিত নতুন ট্যাক্স এর পরিমাণ প্রকাশ করেছেন। এই বিজ্ঞপ্তি পর্যালোচনায় দেখা যায় যে, নগরবাসী যে হারে গৃহকর দিয়ে আসছিলেন তার চেয়ে নতুন করের অংক কোন কোন ক্ষেত্রে ৫ শত গুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে। যাহা অযৌক্তিক অন্যায্য এবং জনস্বার্থের পরিপন্থী। আমরা এর প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক স্টেকহোল্ডার বা অংশীজন তথা করদাতাদের কোন রুপ মতামত গ্রহণ ব্যতিরেকে যে পদ্ধতিতে উপর থেকে ট্যাক্সের বোঝা চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে, তাহা কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য গণতান্ত্রিক নয়। যাহাতে নগরবাসী উদ্বিগ্ন, উৎকন্ঠিত এবং চরম অনিশ্চয়তার মুখোমুখি হয়েছেন। এখানে উল্লেখ করা আবশ্যক যে, সিলেট মহানগর কোন বিচারেই ঢাকা, চট্টগ্রাম, গাজীপুর কিংবা নারায়ণগঞ্জের ন্যায় শিল্পসমৃদ্ধ কোন জনপদ নয়।
মেয়রসহ নির্বাচিত পরিষদ নগরীর ভোটারদেরকে সম্পূর্ণ অন্ধকারে রেখে বিরাট মাত্রায় কর ধার্য করেছেন এটা নগরবাসীর কাছে অপ্রত্যাশিত। একটি স্থানীয় সরকারকে অর্থনৈতিক ভাবে সমৃদ্ধ ও স্বাবলম্বী করে তুলতে নাগরিকদের কর প্রদান করার আবশ্যকতা সর্বজন স্বীকৃত। নির্দিষ্ট সময় পর পর চলমান করের হার শতকরা ৫ থেকে সর্বোচ্চ ২৫ ভাগ পর্যন্ত বৃদ্ধি করার গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। কিন্তু সহনীয় মাত্রায় কর বৃদ্ধি না করে এক লাফে শতভাগ বৃদ্ধি করার সিদ্ধান্ত অকল্পনীয়। আমরা এই কর আরোপের সিদ্ধান্ত অনতিবিলম্বে বাতিল করার দাবী জানাচ্ছি এবং চরম গণ অসন্তোষ বিবেচনায় নিয়ে হোল্ডিং ট্যাক্স বৃদ্ধির কার্যক্রম, ফরম বিতরণ ইত্যাদি বন্ধ করে নগরবাসীর মতামতের ভিত্তিতে যুক্তিসঙ্গত অ্যাসেসমেন্ট প্রক্রিয়ায় নতুন কর ধার্য করার আহবান জানাচ্ছি।
সিলেটের নাগরিকবৃন্দ এর পক্ষে সিলেট সিটি করপোরেশন মেয়র বরাবর স্মারকলিপিতে সিলেটের বিভিন্ন রাজনৈতিক, পেশাজীবি সংগঠনের ৫২ জন নেতৃবৃন্দ স্বাক্ষর করেছেন। স্মরকলিপিতে স্বাক্ষর করেছেন: সিলেটের নাগরিকবৃন্দ আহবায়ক এমাদ উল্লাহ শহিদুল ইসলাম, দরগাহ এ হযরত শাহজালাল (রঃ) মোতাওয়াল্লী সরেকওম ফতেউল্লাহ আল আমান, প্রবীণ রাজনীতিবিদ বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট বেদানন্দ ভট্টাচার্য, জাসদ সিলেট জেলা সভাপতি লোকমান আহমদ, সিলেট প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ইকবাল সিদ্দিকী, সুজন সিলেট জেলার সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরী, বিএএম এর সাবেক সাধারণ সম্পাদক ডা: ময়নুল ইসলাম, বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির জেলা সভাপতি মাহি উদ্দিন আহমদ সেলিম, সিলেট প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম, বিশিষ্ট মানবাধিকার কর্মী ব্লাস্টের সাবেক সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট মোঃ ইরফানুজ্জাসান চৌধুরী, সিলেট আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট গোলাম ইয়াহ চৌধুরী, সিলেট জেলা কর আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট মৃত্যঞ্জয় ধর ভোলা, সিলেট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি দেওয়ান গোলাম রাব্বানী, মোঃ জামিলুল হক, সিলেট আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট হোসেন আহমদ, মোঃ ফজলুল হক সেলিম, সিলেট আয়কর আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ আজিজুর রহমান, বাংলাদেশ মহিলা আইনজীবী সমিতির বিভাগীয় প্রধান অ্যাডভোকে সৈয়দা শিরীন আক্তার , বৃহত্তর সিলেট গণদাবী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট বদরুল ইসলাম, অধ্যাপক জান্নাত আরা খান পান্না, সম্মিলিত নাট্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাক আহমেদ, সাম্যবাদী দলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ব্রজপোপাল, গণতন্ত্রী পার্টির জেলাা সভাপতি মো: আরিফ মিয়া, বাসদ জেলা আহবায়ক আবু জাফর, ওয়ার্কার্স পার্টি জেলা সভাপতি সিকান্দর , বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের জেলা সভাপতি সিরাজ আহমদ, জাসদ মহানগর সভাপতি ফারুক আহমেদ, জাসদ মহানগর সাধারণ সম্পাদক গিয়াস আহমদ, গণতন্ত্রী পার্টির জেলা সাধারণ সম্পাদক জুনেদুর রহমান চৌধুরী, জাসদ জেলার সাধারণ সম্পাদক কে.এ কিবরিয়া, সিপিবি জেলা সাধারণ সম্পাদক খায়রুল হাছান, নাগরিক মৈত্রীর আহবায়ক অ্যাডভোকেট সমর বিজয় সী শেখর, পরিবেশ ও ঐতিহ্য সংরক্ষণ আন্দোলনের ট্রাষ্টি জাকির হোসেন সোহেল, উদীচী জেলা সাধারণ সম্পাদক দেবব্রত পাল মিন্টু, খেলাঘর সভাপতি তপন চৌধুরী, ছড়ামঞ্চ সভাপতি সিরাজ উদ্দিন শিরুল, গণ সংগীত শিল্পী রতন দেব, যুবজোট কেন্দ্রীয় সদস্য মোঃ মাহমুদ চৌধুরি, বাপা জেলা সাধারণ সম্পাদক আব্দুল করিম কিম, ইমজা সভাপতি সজল ছত্রী, সাংবাদিক মোঃ আমিরুল ইসলাম চৌধুরী এহিয়া, গণজাগরণ মঞ্চ এর মূখপাত্র দেবাশীষ দেবু, গণতান্ত্রিক আইনজীবী পরিষদের আহবায়ক অ্যাডভোকেট মনির উদ্দিন, সিলেট আইনজীবী সমিতির সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট হুমায়ূন রশীদ সোয়েব, সাম্যবাদী আন্দোলন জেলা সমন্বয় সুশান্ত সিনহা, বাসদ জেলা সদস্য সচিব প্রণব জ্যোতি পাল ,বাসদ মার্কসবাদী নেতা সঞ্জয় দাস, মুখলেছুর রহমান, যুব ইউনিয়ন সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান প্রমূখ।
সিলেট সিটি করপোরেশন মেয়র বরাবর স্মারকলিপি প্রদান পরবর্তী বক্তব্যে সিলেটের নাগরিকবৃন্দ আহবায়ক এমাদ উল্লাহ শহিদুল ইসলাম বলেন, আমরা মেয়র বরাবর স্মারকলিপির মাধ্যমে সিলেট নগরবাসীর দাবি জানিয়েছি। সিলেট সিটি করপোরেশন কর্তৃক একতরফা ভাবে অতি উচ্চহারে হোল্ডিং ট্যাক্স আরোপের অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত অনতিবিলম্বে বাতিল করার দাবী জানিয়েছি। আমরা আমাদের আন্দোলন অব্যহত রাখবো। আমরা নগরীর সকল ওয়ার্ডে ধারাবাহিকভাবে গণসংযোগ, মতবিনিময় করে পরবর্তী আন্দোলন ঘোষণা দেব, যদি হোল্ডিং ট্যাক্স আরোপের অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত অনতিবিলম্বে বাতিল করা না হয়।